আর তিন দিন পরই ধন্তেরাস, কালীপূজো ও ভাইফোঁটা। তার মধ্যেই নেমে এল বিপদের খাড়া। যার ফলে জরুরী ভিত্তিতে সব ছুটি বাতিল করতে বাধ্য হলো পশ্চিমবঙ্গ সরকার। উৎসবের মরশুমে ও রাজ্যবাসীর সুরক্ষার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে প্রশাসনকে। কোন কোন ক্ষেত্রের কর্মীদের ছুটি বাতিল, কোন কোন স্কুল খোলা থাকবে, রইলো বিস্তারিত বিবরণ।
বেশ কয়েকদিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল কালীপুজোর সময় বাংলায় আছড়ে পড়তে পারে এক ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়। সেই ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ঘন্টায় প্রায় ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। এই খবর জানার পর থেকেই বাংলার মানুষ ফের একবার অতীতের দুঃসহ স্মৃতি ফিরে আসছে বলেই মনে করছেন।
আমফানের স্মৃতি মনে করিয়ে দিচ্ছে নয়া ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং Cyclone Sitrang সেক্ষেত্রে আলোর উৎসবের সময় যদি পূর্বাভাস অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং বাংলার উপকূলে আছড়ে পড়ে, কতটা ক্ষয় ক্ষতি হতে পারে তা নিয়ে বঙ্গবাসী এখন চিন্তিত। ইতিমধ্যেই সমস্ত রাজ্য সরকারি কর্মীদের ছুটি বাতিল করেছেন নবান্ন।
নবান্নর তরফে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় রাজ্য সরকার প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে।
তাই ইতিমধ্যেই জরুরী কাজে কর্মরত সমস্ত সরকারি কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। যারা এখন ছুটিতে রয়েছেন তাদের ২২ অক্টোবর এর মধ্যে কাজে যোগ দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সমস্ত কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং পরিস্থিতি নিয়ে সমস্ত অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে।
ছুটি বাতিল নিয়ে কি বললেন মুখ্যমন্ত্রী?
গতকাল জানবাজারে কালীপুজোর উদ্বোধন করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আবহাওয়া দপ্তরের যে ফোরকাস্ট আছে তাতে আকাশের দিকে তাকাতে হচ্ছে। কালীপুজোয় প্রচুর বৃষ্টি হবে। সমস্ত কর্মীদের ছুটি বাতিল। অফিসারদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করা হবে। যে সমস্ত স্কুলে রিলিফ সেন্টার হয়, সেগুলোকে প্রস্তুত রাখতে হবে।
এদিকে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর আন্দামান সাগর এবং সংলগ্ন দক্ষিণ আন্দামান সাগর ও দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। নিম্নচাপটি ক্রমশ পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে সরতে শুরু করেছে। এর ফলে ২২ অক্টোবর এটি সুস্পষ্ট নিম্নচাপে পরিণত হবে। তারপরে ধীরে ধীরে শক্তি বাড়িয়ে ২৩ অক্টোবর গভীর নিম্নচাপের আকার নিতে চলেছে।
দিওয়ালী ধামাকা, ব্যাংকে একাউন্ট থাকলেই RBI দিচ্ছে বিরাট উপহার, এখুনি লুফে নিন।
হাওয়া অফিস থেকে জানা যাচ্ছে, ২৪ অক্টোবর অর্থাৎ সোমবার এই গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের রূপ নিতে চলেছে। যার ফলে কালীপুজো এবং দীপাবলীর সময় প্রবল দুর্যোগের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। হাওয়া অফিস সূত্রে জানা যাচ্ছে, সিত্রাংয়ের অভিমুখ হতে পারে বাংলা- বাংলাদেশের উপকূল। নিম্নচাপটি ক্রমশ উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে সরে গিয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের আকার নিয়ে প্রবল বেগে বাংলা- বাংলাদেশের উপকূলে হিট করতে চলেছে।
বিভিন্ন সূত্রে শোনা যাচ্ছে, আমফানের থেকেও গতিবেগ তীব্র হতে পারে সিত্রাংয়ের। আর তাই যদি হয়, পূর্বাভাস অনুযায়ী Cyclone Sitrang যদি ২৫ অক্টোবর অর্থাৎ মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ- বাংলাদেশের উপকূলে তীব্র বেগে আছড়ে পড়ে তাহলে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। ফের একবার উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দারা সর্বস্ব হারানোর আশঙ্কায় ভুগছেন।
গ্রাহকদের বিপদে ফেলে সমস্ত জনপ্রিয় প্ল্যান বন্ধ করে দিল জিও, নতুন রিচার্জ প্ল্যানের তালিকা দেখুন।
কালীপুজোর পরদিন পশ্চিমবঙ্গ- বাংলাদেশের উপকূলে সিত্রাং প্রবল বেগে হিট করার ফলে তার সরাসরি প্রভাব যদি বাংলার উপরে পড়ে, তাহলে সংলগ্ন এলাকার মানুষদের কোন জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে তার প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই নিতে শুরু করে দিয়েছে নবান্ন। সব মিলিয়ে সাইক্লোন সিত্রাংয়ের মোকাবিলায় কোমর বাঁধতে শুরু করেছে নবান্ন। এই দুর্যোগের আশংকা যদিও উৎসবের আমেজ কে ফিকে করছে, তবুও বিপদের আগে পূর্ব প্রস্তুতির কোনও খামতি রাখতে চাইছেনা প্রশাসন।
Written by Rajib Ghosh.