পঞ্চায়েত ভোট ইস্যুতে বিজেপি, সিপিআইএম, কংগ্রেসের মত রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর একই সুর শোনা গেল এবার বকেয়া ডি এর দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের সদস্যদের গলায়। একদিকে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দিতে হবে, সেই দাবিতে যেমন রাস্তায় বসে আন্দোলন করছেন, বিভিন্নভাবে ধর্মঘট কর্মবিরতির মতো কর্মসূচি ঘোষণা করে কৌশলে রাজ্য সরকারকে চাপে ফেলার চেষ্টা করছেন, যখন পঞ্চায়েত ভোট একেবারে দোরগোড়ায়, ঠিক সেই সময় আবার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর গলাতেই সুর মিলিয়ে গাইতে শুরু করলেন যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের সদস্যরা।
পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনির দাবি ভোট কর্মীদেরঃ
তাদের দাবি, পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayat Election) কেন্দ্রীয় বাহিনী চাই। রাজ্যজুড়ে পঞ্চায়েত ভোট মে মাসে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও এখনো দিনক্ষণ ঘোষণা হয়নি। তবে শীঘ্রই দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে যেতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। আর এর মধ্যেই নতুন কৌশল রচনা করার চেষ্টা করছেন DA আন্দোলনকারী রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের একাংশ। তাদের দাবি, কেন্দ্রীয় বাহিনীর (Central Force) উপস্থিতিতে পঞ্চায়েত ভোট করাতে হবে। তা না হলে তারা ভয় পাচ্ছেন তাদের সুরক্ষা নিয়ে।
এই বিষয়ে বর্ধমানে এক সভায় যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের তরফে তাদের কনভেনার জানান, কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া পঞ্চায়েত ভোট করাতে তারা যাবেন না। রাজ্যের মানুষের সুরক্ষা এবং তাদের ডিউটি করতে গিয়ে সুরক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীর দরকার। এর আগে পঞ্চায়েত নির্বাচনে একাধিক বিশৃঙ্খলা, প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। তাই সেই কারণে এবার পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া তারা ভোট করাতে যাবেন না। যদি কেন্দ্রীয় বাহিনী না দেওয়া হয়, তাহলে তারা যাবেন না। সেক্ষেত্রে সরকার, নির্বাচন কমিশনের কোনো কথাই তারা শুনবেন না। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে, তাদের দাবি না মানা হলে তারা ভোট করাতে যাবেন না।
এদিকে রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে আদালতের দোরগোড়ায় যথারীতি নিয়ম অনুযায়ী পৌঁছে গিয়েছে বিরোধী দল বিজেপি। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এবং বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় ওবিসি সম্প্রদায়ের গণনা প্রসঙ্গটি তুলে ধরেন। কলকাতা হাইকোর্টের পক্ষ থেকে বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো ব্যাপারেই আদালত হস্তক্ষেপ করবে না। নির্বাচন কমিশন এই বিষয়ে সম্পূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
আর এর পরেই একটুও অপেক্ষা না করে সোজা পৌছে গেছেন সুপ্রিম কোর্টে। হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই মামলাতেও এবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, পঞ্চায়েত নির্বাচন সামনে। রাজ্য নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। কিভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাধা দেওয়া হবে? ফলে শুভেন্দুর আর্জি সম্পূর্ণ খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। স্বাভাবিকভাবেই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর রাজ্যজুড়ে সমস্ত বুথে ভোট করানোর মতো সংগঠন নেই। আর সেই কারণেই তারাও মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন পদ্ধতিতে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এই সমস্ত প্রকল্পে আধার লিঙ্ক না করলে সরকারি পরিষেবা পাবেন না, নতুন তালিকা প্রকাশ
আর সেই একই পথে হাঁটতে দেখা গেল এবার DA আন্দোলনকারী রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশের সংগঠন যৌথ সংগ্রামী মঞ্চকে। যারা ডিএ নিয়ে আন্দোলন করছে, তারা আবার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সুরে গলা মিলিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইছে পঞ্চায়েত ভোটে। অনেকের মতে, যারা মোটা টাকা মাইনে পাওয়ার পরেও মোটা অংকের DA আদায়ের দাবিতে কাজকর্ম ছেড়ে দিয়ে রাস্তায় বসে নিজেদের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন, তারা এই মুহূর্তে রাজ্যবাসীর সুরক্ষা নিয়ে আচমকাই ভাবতে শুরু করে দিয়েছেন।
পড়ুয়াদের জন্য সামার প্রোজেক্ট ডিজাইন শিক্ষা দফতরের , কত দিনের মধ্যে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে?
ফলে সেই বিষয়টি নিয়েও ধন্দ তৈরি হয়েছে। আর এখানেই অনেকে তাদের যৌথ মঞ্চকে বিরোধী দলের ভূমিকা নিতে দেখা যাচ্ছে বলে মনে করছেন। এবার দেখার বিষয়, যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের এই হুঁশিয়ারিতে নির্বাচন কমিশন আদৌ কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কিনা।
Written by Rajib Ghosh.