নবান্নে অমিত মিত্র, DA (Dearness Allowance) নিয়ে বড় খবর, জেনে নিন।
পশ্চিমবঙ্গে DA দেওয়া নিয়ে যখন এত চাপানউতোর চলছে, কোলকাতা হাইকোর্টের নির্ধারিত সময় শেষ হতে চলেছে, সেই সময়ে নবান্নে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র। আর অমিত মিত্র নবান্নে যাওয়াতেই জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে।
তবে কি DA নিয়ে কোনো সদর্থক আলোচনা করতেই তিনি গিয়েছিলেন? রাজ্য সরকারি কর্মীরা কি শীঘ্রই DA পেতে চলেছেন? সেই বিষয়ে কি কোনো ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে? সরকারি কর্মীদের মধ্যে এই বিষয়ে জল্পনা আরও তীব্র হয়েছে। তার কারণ দীর্ঘদিন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী ছিলেন অমিত মিত্র। রাজ্যের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্বন্ধে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল তিনি।
তাই যখন Dearness Allowance দেওয়া নিয়ে আদালতের নির্দেশের পরে সরকারের পক্ষ থেকে পিটিশন দাখিল করা হয় এবং সেখানেও আদালত একই নির্দেশ বহাল রাখে, ঠিক সেই সময়ে নবান্নে অমিত মিত্রের যাওয়াকে যথেষ্ট অর্থবহ বলেই মনে করছেন অনেকে। আর ভালো হোক আর মন্দ, ডিএ ঘোষণা হোক আর সুপ্রীম কোর্টে যাওয়া, রাজ্য কোন পথে হাটবে, সেই ব্যাপারেই আলোচনা হয়েছে বলেই মনে করছেন অনেকে।
সংবাদ সুত্রে জানা গেছে, অর্থসচিব মনোজ পন্থের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ অমিত মিত্র বৈঠক করেন। সেখানে আর্থিক বিষয়ের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়। তবে ডিএ প্রসঙ্গে কোনো খবর এখনো পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে পশ্চিমবঙ্গের আর্থিক পরিস্থিতি কিরুপ, আর এই মুহুর্তে হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্যের অবস্থান কিরুপ হওয়া উচিত? রাজ্য কি রায় মেনে নেবে নাকি উচ্চ আদালতে যাবে? এইসমস্ত ব্যাপারেই আলোচনার কথা হয়েছে বলে মনে করছেন, রাজ্য সরকারী কর্মীদের একাংশ।
এর আগে কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার জন্য সরকারকে নির্দেশ দেয়। কিন্তু রাজ্য সরকার হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করে। কিন্তু তারপরেও আদালত পূর্বের নির্দেশ বহাল রাখে। এই বিষয়ে আগামী ৪ নভেম্বর শুক্রবারের মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এবং অর্থসচিব মনোজ পন্থকে হলফনামা দাখিল করতে বলা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যুৎ বিল অর্ধেক বা 50% করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী, এই সুযোগ হাতছাড়া করবেন না!
সরকারি কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশীষ শীল, এই বিষয়ে বলেন, নবান্নে অমিত মিত্র যাওয়ার পরে ডিএ প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে কিনা জানা নেই। তবে দীর্ঘদিন অর্থমন্ত্রী ছিলেন অমিত মিত্র। একবার বাজেট পেশ করার সময়ে তিনি বলেছিলেন সরকারি কর্মচারীদের থেকে ১৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা সাশ্রয় করা হয়েছে।
ফলে অমিত মিত্র সরকারি কর্মীদের DA দেওয়ার পক্ষে নন। তাই তিনি নবান্নে গিয়ে আলোচনা করায় কোনো ইতিবাচক ফল হবে বলে মনে হচ্ছে না। ৪ নভেম্বরের মধ্যে আদালতে মুখ্যসচিব এবং অর্থসচিবকে এই বিষয়ে জানাতে হবে। যদি তারা আদালতে না যান তাহলে স্পষ্ট হয়ে যাবে সরকার সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে।
তবে সুপ্রিম কোর্টে গেলেও সেখানে লড়াইয়ের জন্য সরকারি কর্মচারী পরিষদ প্রস্তুত রয়েছে। সরকারি কর্মীদের DA মিলবেই। ২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর দীর্ঘদিন অর্থমন্ত্রী ছিলেন অমিত মিত্র। ফলে সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা না দেওয়ার দায় তার ওপরেও পড়ে।
বদলে গেল ATM থেকে টাকা তোলার নিয়ম, না মানলে প্রতিবার 100 টাকা ফাইন।
এই বিষয়ে রাজ্য সরকার কি সিদ্ধান্ত নিতে পারে? এই প্রসঙ্গে গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ এর সাধারণ সম্পাদক জানান, নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র গিয়েছিলেন বলে শুনেছি। সেখানে অর্থসচিবের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তবে DA দেওয়া নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা আমাদের জানা নেই। অমিত মিত্র নবান্নে যাওয়ায় আমরা আশাবাদী।
তিনি মনে করেন, কোনো ইতিবাচক সদর্থক সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। DA দেওয়া নিয়ে রাজ্য সরকারকে হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। ৪ নভেম্বরের মধ্যে মুখ্যসচিব এবং অর্থসচিবকে আদালতে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে হয়তো ৪ নভেম্বর সরকারি কর্মীদের DA দেওয়ার বিষয়ে কোনো ঘোষণা হতে পারে। এদিকে রাজ্য সরকারী কর্মীদের জানুয়ারী থেকে বেতন অনিয়মিত হবে, এই খবর ছড়িয়েছে, এই পরিস্থিতিতে ডিএ ঘোষণা আদৌ কতটা বাস্তবিক হবে, প্রশ্ন থেকে যায়।
যদিও সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে অনেকেই মনে করছেন, ৪ নভেম্বরের মধ্যে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কর্মীদের DA দেওয়ার বিষয়ে কোনো বড় ঘোষণা হতে পারে। আর যদি তা না হয়, তবে রাজ্য যে সুপ্রীম কোর্টে যাচ্ছে, তা স্পষ্ট। আর সেই ব্যাপারে ভালো মন্দ সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করার জন্যই তার নবান্নে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। আপডেট আসছে।
Written by Rajib Ghosh.