ফের মহার্ঘভাতা তথা ডিএ নিয়ে বৈঠকে বসতে বললো হাইকোর্ট, এবার কি হয়?
পশ্চিমবঙ্গে মহার্ঘভাতা বা Dearness Allowance আন্দোলন অব্যাহত। সেই যে কলকাতার শহীদ মিনার চত্বরে বিক্ষোভ ধরণা কর্মসূচি শুরু করেছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশের সংগঠন যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ, সেই আন্দোলন চলছে। এরই মধ্যে দিল্লির যন্তর মন্তরে দুই দিনের ধরনা কর্মসূচি করে এসেছেন রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের একাংশের যৌথ মঞ্চের সদস্যরা। দীর্ঘদিন ধরেই কেন্দ্রের আগে হারে বকেয়া মহার্ঘভাতা মেটানোর দাবিতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে সরকারি কর্মচারীদের একাংশ।
যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রের হারে মহার্ঘভাতা দেওয়া সম্ভব নয়। রাজ্য সরকারের চাকরি করে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের মতো DA দাবী করা যায় না। তবে এর মধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টে মহার্ঘভাতা আন্দোলন প্রসঙ্গে নতুন নির্দেশ শোনা গিয়েছে। সেখানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, রাজ্য সরকারকে একটি কমিটি তৈরি করতে হবে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য সচিব সেই কমিটির নেতৃত্ব দেবেন। সেই কমিটিতে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ৫ জন প্রতিনিধি থাকবেন। যারা দীর্ঘদিন ধরে এই মহার্ঘভাতার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে ওই কমিটিকে বৈঠকের দিন ঠিক করতে হবে। আগামী ১৭ ই এপ্রিলের মধ্যে এর আগে কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকে বৈঠক করার নির্দেশ দেয়। কর্মবিরতির সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে হাইকোর্টে তখন জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতেই ১৭ এপ্রিলের মধ্যে রাজ্য সরকারকে DA আন্দোলনকারী কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠকের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট।
জানানো হয়েছিল, ১৭ ই এপ্রিল রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং অর্থসচিবের উপস্থিতিতে সরকারি কর্মচারী সংগঠনের ৩ সদস্য আলোচনায় বসবেন। এবার সোমবার ফের হাইকোর্টের পক্ষ থেকে বিচারপতিরা জানিয়েছেন, আগামী ১০ দিনের মধ্যে DA নিয়ে জট কাটানোর জন্য রাজ্য এবং কর্মী সংগঠনকে আলোচনায় বসতে হবে। দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যে সরকারি কর্মচারীদের একাংশের পক্ষ থেকে এই আন্দোলন চলার ফলে সরকারি ক্ষেত্রে কাজের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
বেশ কিছু জায়গায় সমস্যা তৈরি হচ্ছে। সেই বিষয়েই কলকাতা হাইকোর্ট আগেই বৈঠকে বসার নির্দেশ দিয়েছিল। এবার সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের তরফে আগামী ১০ দিনের মধ্যে বকেয়া মহার্ঘভাতা নিয়ে সমস্যার সমাধানের জন্য আলোচনায় বসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মামলাকারী সংগঠন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়ীজের তরফে DAর প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের প্রাপ্ত ডি এর হার হওয়া উচিত ২২১ শতাংশ।
কিছুদিন আগেই মার্চ মাসে বাজেটের সময় রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ৩ শতাংশ DA বৃদ্ধি করা হয়েছে। মোট এই মার্চ মাস থেকেই ৬ শতাংশ হারে মহার্ঘভাতা পাচ্ছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। কিন্তু তাতেও তারা সন্তুষ্ট হতে পারেননি। সরকারি কর্মচারীদের একাংশের দাবি, কেন্দ্রীয় হারে DA দিতে হবে। এই মামলাটি এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। এখনো পর্যন্ত সেখানে শুনানি হয়নি। সেই দিকে লক্ষ্য রেখে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, যেহেতু সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি বিচারাধীন, তাই কোনো কর্মবিরতির পথে তারা যেন না হাঁটেন।
এর আগে বকেয়া মহার্ঘভাতার দাবিতে কর্মবিরতি, ধর্মঘট, পেনডাউন, ডিজিটাল স্ট্রাইক এর মত কর্মসূচির ডাক দেয়। যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের ধর্মঘটের সময় যে সমস্ত সরকারি কর্মচারীরা দপ্তরে অনুপস্থিত ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে নবান্ন। আর এই মধ্যেই দিল্লির যন্তর মন্তরে গিয়ে ধরণা কর্মসূচি পালন করেছে যৌথ মঞ্চের প্রায় ৫০০ সদস্য। এই বিষয়ে আবার জানা গিয়েছে, তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ টুইটে জানিয়েছেন, হিন্দু মহাসভার বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন যৌথ মঞ্চের সদস্যরা। সেই বাড়ি ভাড়া বাবদ মোটা অংকের টাকা তারা ব্যয় করেছেন।
ভারতের 3 টি নিরাপদ ও বিশ্বস্ত ব্যাঙ্কের তালিকা প্রকাশ করলো রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
ফলে ওই বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সেখানে জানানো হয়েছে, হিন্দু মহাসভার বাড়ি ভাড়া করতে যে মোটা অংকের টাকা দিয়েছে যৌথ মঞ্চের সদস্যরা, সেই বিষয়টি নিয়ে তারা যেন স্পষ্ট ভাবে তাদের বক্তব্য পেশ করেন। অনেকেই মনে করছেন, তাদের এই ধরনের কর্মসূচির পিছনে রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রচ্ছন্ন ইন্ধন রয়েছে। দিল্লিতে তারা উপরাষ্ট্রপতি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপিও জমা দিয়েছেন। এবার বকেয়া ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে ডি এ আন্দোলনকারী সংগঠনের প্রতিনিধিদের বসার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এবার দেখার বিষয়, সেখানে আদৌ কোনো সমস্যা সমাধান সূত্র বের হয় কিনা।
Written by Rajib Ghosh.
ড্রাইভিং লাইসেন্সে বড় বদল আনছে রাজ্য, বাড়ি থেকে গাড়ি নিয়ে বেরানোর আগে জেনে নিন।