বকেয়া ডিএ এর দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের একাংশ যে DA Strike আন্দোলন করছেন, এবার তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। আগামী ১০ মার্চ রাজ্যের স্কুল কলেজসহ সরকারি সমস্ত দপ্তরে রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠনের একাংশ যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের তরফে ধর্মঘটের (DA Strike) ডাক দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যেই তাদের সেই ধর্মঘটকে বামপন্থী সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন কো-অর্ডিনেশন কমিটির তরফে সমর্থন জানানো হয়েছে। আর আগামী ১০ মার্চ এই ধর্মঘটে যদি কোনো সরকারি কর্মচারী যথাযোগ্য কারণ না দেখিয়ে অনুপস্থিত থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সরকার।
DA Strike in West Bengal:
বকেয়া DA এর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন চালাচ্ছেন সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। তাদের দাবি, ৩৯ শতাংশ DA দিতে হবে। সম্প্রতি রাজ্য সরকার সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৬ শতাংশ DA মার্চ মাস থেকেই লাগু করে দিয়েছে। কিন্তু তাতেও খুশি হতে পারেননি সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। আর এবার তাদের দাবি অনুযায়ী, ৩৯ শতাংশ DA না মেটালে বৃহৎ DA Strike আন্দোলন কর্মসূচির হুশিয়ারি দিয়েছে তারা।
এর আগে ২০ এবং ২১ ফেব্রুয়ারি DA আন্দোলনকারীরা রাজ্যজুড়ে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন। সার্বিকভাবে সেই কর্মবিরতিতে সকল কর্মচারী অংশগ্রহণ না করলেও বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু কর্মচারী অংশ নিয়েছিলেন।
সেই সময়ও সেই কর্মবিরতি প্রসঙ্গে নবান্ন নির্দেশিকা জারি করেছিল। যথাযোগ্য কারণ ছাড়া অনুপস্থিত থাকলে তাদের চাকরি জীবনে ১দিনের ছেদ পড়বে এবং ১দিনের বেতন কেটে নেওয়া হবে। পাশাপাশি, শোকজ (Show cause) করা হবে সংশ্লিষ্ট কর্মীকে।
এবারও সেই একই পথে হেঁটেই আগামী ১০ মার্চ DA আন্দোলনকারীদের DA Strike ধর্মঘটের পরিপ্রেক্ষিতে কড়া নির্দেশ জারি করেছে নবান্ন। স্পষ্টভাবে বলে দেওয়া হয়েছে, কোনো কর্মচারী ছুটি নিতে পারবেন না।
যদি একান্তই ছুটি নিতে হয় তাহলে যথাযোগ্য কারণ দেখাতে হবে। তা না হলে চাকরি জীবনে ১দিন ছেদ পড়বে এবং কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যজুড়ে অ্যাডিনোভাইরাসের (Adenovirus) সংক্রমণ ঘটছে শিশুদের মধ্যে। যার ফলে শিশুরা খুব তাড়াতাড়ি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি পর্যন্ত হচ্ছে। এর মধ্যেই বেশ কিছু শিশু মারা পর্যন্ত গিয়েছে। আর তাই এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে DA Strike নিয়ে রাজ্য সরকার কড়া নির্দেশ বলবৎ করেছে। হাসপাতালের সুপার, ডেপুটি সুপার, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট, শিশুদের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের সঙ্গে যুক্ত স্বাস্থ্যকর্মী, ডাক্তার, নার্স, কেউ ছুটি নিতে পারবেন না। একান্তই যদি ছুটি নিতে হয় কোনো জরুরী প্রয়োজনে, তাহলে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলে উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে অনুমতি নিতে হবে। তা না হলে সরকারের তরফে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাশাপাশি, রাজ্যজুড়ে পরিবহন (Transport Service) ব্যবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দিন কয়েক পরেই রাজ্যে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা (HS Exam) শুরু হচ্ছে। যাতে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং একাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় কোনোরকম অসুবিধার সম্মুখীন না হতে হয়, সেই কারণে ইতিমধ্যেই শিক্ষক এবং শিক্ষা কর্মীদের সমস্ত ছুটি বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনো শিক্ষক এবং শিক্ষা কর্মী ছুটি নিতে পারবেন না। যদি একান্তই ছুটি নিতে হয়, উপযুক্ত কারণ দেখাতে হবে। তা না হলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
স্কুলের মিড ডে মিল এবার স্বনির্ভর গোষ্ঠী চালাবে, এক দলের মজা, এক দলের সাজা।
যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের ১০ মার্চের এই ধর্মঘটকে বামপন্থী চিকিৎসক সংগঠন সমর্থন জানিয়ে একদিনের প্রতীকি ধর্মঘটের (One Day DA Strike) সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যে সময় রাজ্যজুড়ে অ্যাডিনোভাইরাসের প্রকোপে শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে, ঠিক সেই সময় স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মচারীদের এই ধরনের পদক্ষেপ ঘিরে চর্চা শুরু হয়েছে। নবান্নের তরফে কড়া নির্দেশিকা জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোনো স্বাস্থ্যকর্মী ছুটি নিতে পারবেন না। এই সময়ে সিএল (CL) নিতে পারবেন না কেউই। সমস্ত ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশ জারি থাকবে। অন্যথায় নবান্নের তরফে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারী কর্মীদের কেন্দ্রীয় হারে 37% DA দেওয়ার কথা দিলেন।
সরকারি কর্মচারীদের একাংশ বলছেন, এইভাবে সার্ভিস ব্রেক করা যায় না। কারন পশ্চিমবঙ্গের সার্ভিস রুল ১৯৮০ অনুযায়ী কোনও কর্মী তার দাবী আদায়ে ধর্মঘট করতে পারে। তাই DA Strike করার সেই অধিকার তাদের দেওয়া রয়েছে। বকেয়া ডি এর দাবিতে তাদের যে DA Strike আন্দোলন চলছে, তা তারা চালিয়ে যাবেন বলে জানানো হয়েছে।
Written by Rajib Ghosh.