পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকার সংবেদনশীল। প্রশাসনিক মাথা হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বস্তরের মানুষের কথা যেভাবে ভাবেন, সেখানে অন্যরকম বাতাবরণ তৈরি করে কোনো লাভ হবে না। DA প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এদিনের বক্তব্যে মহার্ঘভাতা দেওয়া নিয়ে রাজ্যের পরিকল্পনা জানিয়ে দিলেন সংবাদ চ্যানেলে।
রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাধিক সংগঠন। বকেয়া মেটানোর দাবিতে যেমন একদিকে আদালতে মামলা চলছে, ঠিক তেমনি রাস্তায় নেমেও লড়াই আন্দোলনে সামিল হচ্ছেন কর্মীরা। সম্প্রতি সরকারি কর্মীদের একাধিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিধানসভা অভিযান করা হয়। স্বাভাবিকভাবেই সেই আন্দোলনে পুলিশ এবং আন্দোলনকারীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়।
দুই তরফেই প্রত্যেকেই কম বেশি আহত হন। এরপর ৪৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরবর্তীতে তাদের জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের সামনে সমস্ত ডকুমেন্তস অর্থাৎ ৬ষ্ঠ বেতন কমিশন এবং তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আশার পর কি হারের বেতন বৃদ্ধি হয়েছে, তার পরিসঙ্খ্যান তুলে ধরেন।
বকেয়া ডিএ নিয়ে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যঃ
এবার বেতনবৃদ্ধি এবং ডিএ প্রসঙ্গেই অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ২০১১ সালে যখন রাজ্যে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় এসেছিল, তখন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের DA এবং Basic একসঙ্গে মার্জ করে দিয়েছেন। ডিএ এবং বেসিকের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২৫% ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ মানা হয়েছে। পে কমিশনে ৮% বেতন বেড়েছে কর্মীদের। এরকম একটা পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে রাজ্যের তুলনা করলে দেখা যাবে, মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে Dearness Allowance বৃদ্ধি করেছেন, সেই অনুপাতে কেন্দ্রীয় সরকার DA বাড়ায়নি!
রাজ্যের প্রশাসনিক মাথা হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রত্যেকের কথাই ভাবেন। ফলে একটা গেল গেল রব তুলে অন্যরকম বাতাবরণ তৈরি করলে কোনো লাভ হবে না। DA নিয়ে সরকার সংবেদনশীল। রাজ্য সরকারি কর্মীরা DA পান, সেটা তাদের অধিকার। এরপরেই তিনি কেন্দ্রের বঞ্চনার কথা তুলে ধরে বলেন, DA দিন, DA দিন বলে দাবি তোলা হচ্ছে, একটা গেল গেল রব তোলার চেষ্টা হচ্ছে। অথচ কেন্দ্রের কাছে যে রাজ্য ১ লক্ষ ১৮ হাজার কোটি টাকার বেশি পাওনা রয়েছে, সেই বিষয়টি নিয়ে কেউ একবারও বলেন না।
DA দেওয়ার ব্যাপারে সরকার সংবেদনশীল সেই কথা জানানোর মধ্যে দিয়েও অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ডিএ চাওয়ার অধিকার রয়েছে, কিন্তু কনসিডার একটু করতে হবে। প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের DA মামলায় তিন মাসের মধ্যে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সেই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়। তারপরও একই নির্দেশ বহাল রাখে হাইকোর্ট।
2023 সাল থেকে সরকারি চাকরিতে ছাটাই প্রক্রিয়া চালু, কি করলে চাকরী থাকবে না।
সেই নির্দেশের প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করে। এবার DA মামলার ফয়সালা হবে সুপ্রিম কোর্টে। তবে এর মধ্যেই গত সপ্তাহে রাস্তায় আন্দোলনের সামিল হয় সরকারি কর্মীরা। এমনকি সারা রাজ্যে কর্মবিরতির বার্তা দেওয়া হয়। কিন্তু সরকারি কর্মীরা কাজ না করলে যে রাজ্য অচল হয়ে যাবে। সেই কর্তব্যের কথাও স্মরন করিয়ে দেন।
এদিকে সরকারি কর্মচারীদের বক্তব্য অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের থেকে ৩৫ শতাংশ DA কম পান রাজ্য সরকারি কর্মীরা। এই দাবিতে সরকারি কর্মীদের একাধিক সংগঠন দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করছেন। বার বার আদালতে DA দেওয়ার নির্দেশ দিলেও ভ্রুক্ষেপ করেনি রাজ্য সরকার।
বকেয়া ডিএ মেটাতে রাজ্য সরকারের প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক এবং অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীরা মিলিয়ে প্রায় ৬ লক্ষ মানুষ এই মহার্ঘ ভাতার আওতায় আসবেন। তবে সরকারের তরফে DA প্রসঙ্গে বক্তব্য পেশ করা হলেও এই মামলার ফায়সালা হবে এবার সুপ্রিম কোর্টেই।
এদিকে এই প্রসঙ্গে ডিএ মামলাকারী আইনজীবী প্রবীর চ্যাটার্জি বলেন, DA ছাড়া পে কমিশন ঘোষণা হয়েছে। তারপর মাত্র একবার ৩% DA বেড়েছে, অথচ কেন্দ্র তারপর ৭ বার DA বাড়িয়েছে। তাই কেন্দ্রের চেয়ে রাজ্য বেশি DA দেয়, এই কথাটি শুধুমাত্র অযৌক্তিক ই নয়। দিবাস্বপ্ন বললেও কম বলা হবে। এখন পর্যন্ত রাজ্য একটা পে কমিশন ও ৩৭% DA পিছিয়ে আছে। বিশ্বাস না হলে রাজ্যের স্কুলের একজন প্রাথমিক শিক্ষকের বেতন ও কেন্দ্রীয় স্কুলের একজন প্রাথমিক শিক্ষকের বেতন হিসেব করে দেখুন। কম করে ১৫০০০ টাকা কম বেতন পাচ্ছেন রাজ্যের কর্মীরা।
Written by Rajib Ghosh.
Chandrima ki pagal je da chaara pay commission hoy na tao bolte hobe
Price index should not be increased that should be looked by the Government then DA need not be increased. Government failed to control market prices.