পশ্চিমবঙ্গের যেসমস্ত কর্মীরা, ডিএ ধর্মঘট পালন করেছেন। যাননি কর্মস্থলে। বিশেষ করে স্কুল কলেজের শিক্ষক শিক্ষিকারা, যারা অনুপস্থিত (Absent) থেকেছেন, তাদের রিপোর্ট স্কুল শিক্ষা দপ্তরের কাছে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে। নবান্ন DA ধর্মঘটের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা আগেই জানিয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় হারে DA দেওয়ার দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের একাংশের সংগঠন যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ রাস্তায় বসে ধরণা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। কখনো পেন ডাউন, কখনো কর্মবিরতি, এবার একদিনের ধর্মঘট (Strike) ডেকেছিল রাজ্যের সমস্ত সরকারি দপ্তরে।
ডিএ ধর্মঘট নিয়ে কড়া প্রশাসনঃ
আর DA এর দাবিতে ডিএ ধর্মঘটে কড়া হাতে মোকাবিলা করতেই নবান্নের তরফে নির্দেশিকা পৌঁছে যায়। সেই নির্দেশিকায় জানিয়ে দেওয়া হয়, ডিএ ধর্মঘটের দিন পর পর ৪ বার স্কুল-কলেজ সহ সরকারি সমস্ত দপ্তরের উপস্থিতির হার নিয়ে রিপোর্ট পাঠাতে হবে। পাশাপাশি, যে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং সরকারি আধিকারিক এবং কর্মচারীরা ডিএ ধর্মঘট এর দিন অনুপস্থিত থাকবেন, তাদের নাম এবং ডেজিগনেশন সহ বিস্তারিত রিপোর্ট নবান্নে পৌঁছে দিতে হবে। সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী ইতিমধ্যে স্কুল শিক্ষা দপ্তরে ডিএ ধর্মঘট এর দিন অনুপস্থিত থাকা শিক্ষক শিক্ষিকাদের তালিকা পৌঁছে গিয়েছে। এবার শুরু হয়ে গিয়েছে চর্চা।
সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী শোকজ, ব্রেক ইন সার্ভিস, বেতন কাটার মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। রিপোর্ট পৌঁছে যাওয়ার পরে নবান্নের তরফে সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দপ্তর। নবান্ন গ্রীন সিগন্যাল দিলেই রাজ্যের অর্থ দপ্তরের নির্দেশিকা অনুযায়ী স্কুল শিক্ষা দপ্তর পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করবে। সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে শোকজ করা হলে তার উত্তর যদি যথাযথ না হয়, তাহলে বিভাগীয় তদন্তের (Departmental Enquiry) মুখে পড়তে হবে।
DA ধর্মঘটের দিন বেশ কিছু জেলায় স্কুল কার্যত বন্ধের মুখে পড়েছিল। তুলনামূলকভাবে কিছু জেলায় শিক্ষক-শিক্ষিকা অনেকটাই কম স্কুলে উপস্থিত হয়েছিলেন। এই অভিযোগ ধর্মঘটের দিন সকাল থেকেই স্কুল শিক্ষা দপ্তরের কাছে পৌঁছায়। আর ধর্মঘটের পরের দিন অনেক স্কুলে শিক্ষকদের স্কুলেই ঢুকতে দেওয়নি স্থানীয় মানুষ জন। তারা শিক্ষকদের বলেন, আগে ডিএ নিয়ে আসুন তারপর স্কুলে ঢুকবেন।
সূত্রের খবর অনুযায়ী যা জানা গিয়েছে, শুক্রবার ডিএ ধর্মঘটের দিন রাজ্যজুড়ে প্রায় ৫০০০ শিক্ষক শিক্ষিকা এবং কয়েক হাজার সরকারী কর্মী অনুপস্থিত ছিলেন। এই অনুপস্থিত কর্মী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নামের তালিকা রাজ্য স্কুল শিক্ষা দপ্তরে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
জেলাভিত্তিক যদি দেখা যায়, তাহলে, কোচবিহার জেলায় সবথেকে বেশি শিক্ষক শিক্ষিকারা অনুপস্থিত ছিলেন। তারপরে আলিপুরদুয়ার, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাতেও শিক্ষক শিক্ষিকাদের অনুপস্থিতির হার সবচেয়ে বেশি। আর এই অনুপস্থিত থাকা শিক্ষক শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে, তা নিয়ে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দপ্তর নবান্নের কাছে জানতে চেয়েছে। এছাড়াও শিক্ষা অফিস থেকে প্রচুর শিক্ষকক কে ইতিমধ্যেই শোকজ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন, পশ্চিমবঙ্গে আরও 5 শহরে চালু জিও 5G পরিষেবা, কোন কোন এলাকায়, জেনে নিন।
প্রসঙ্গত রাজ্য জুড়ে নবান্নের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ধর্মঘটের দিন প্রায় ৯০ শতাংশ উপস্থিতি ছিল সরকারি অফিসগুলোতে। যারা অনুপস্থিত ছিলেন তাদের ৪টি কারনের মধ্যে থাকলে ছাড় দেওয়ার কথা জানানো হয়। এছাড়া যাদের উপযুক্ত কারণ থাকবে না, অথচ অনুপস্থিত ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এবার সেই পদক্ষেপ নিয়ে নবান্নের সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় স্কুল শিক্ষা দপ্তর, এমনটাই জানা গিয়েছে।
সরকারী স্কুলের শিক্ষকদের পারিশ্রমিক বাড়িয়ে দিলো পশ্চিমবঙ্গ সরকার, কত টাকা বাড়লো?
এদিকে আজ ডিএ আন্দোলন নিয়ে মাননীয় রাজ্যপাল এবং যৌথ মঞ্চের আলোচনা হয়। ছুটির দিনেও রাজ্যপাল মহাশয় কর্মীদের সময় দিলেন বলে ধন্যবাদ জানান। রাজ্যপাল কর্মীদের দাবীকে গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেন। তবে সরকারী কর্মীরা জনিয়ে দেন একমাত্র ত্রিপাক্ষিল আলোচনার আগে আন্দোলন চলবে কর্মীদের। রাজ্যপাল মহাশয় ও জানান সরকার যদি ত্রিপাক্ষিক আলোচনায় রাজি থাকে তবে তিনি মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত। আপডেট আসছে। আপাতত আন্দোলন চলবে বলে কর্মীদের বিবৃতি। তাদের পরবর্তী সিদ্ধান্ত ডিজিটাল স্ট্রাইক। যেখানে সরকারী কর্মীরা অফিস টাইমের বাইরে ইমেইল, WhatsApp এর মাধ্যমে যে কাজ করানো হয়, সেটা করবেন না।
Written by Rajib Ghosh.
আজ যদি/ যাদের স্ট্রাইকের জন্য সাজা হয় আগামী সরকারে তারা বড় নেতা হবে। বলবে আমরা সংগ্রামী ও শহিদ।