জানুয়ারী থেকে বেতন বন্ধ! আশঙ্কা তৈরি হয়ে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী এবং পেনশনভোগীদের মধ্যে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যের পরেই রীতিমত চিন্তিত তারা। সত্যিই কি জানুয়ারি মাস থেকে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বেতন বন্ধ হয়ে যাবে? এখন এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন অনেকেই।
রাজ্য সরকারী কর্মীদের বেতন বন্ধ নিয়ে রাজনৈতিক তরজা।
শুভেন্দুর বক্তব্যকে গুরুত্ব দিচ্ছেন সংখ্যায় কম হলেও কিছু মানুষ। আবার যারা শুভেন্দুকে চেনেন তারা তার কথাকে আমল দিতে রাজি নন। অধিকাংশ মানুষ বুঝতে পারছেন এই ধরনের বেহিসেবি কথা বলে একটা বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছেন শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপির নেতারা।
আর যে কারণে এই ধরনের বক্তব্য তারা পেশ করছেন তাতে যে রাজ্যে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সেটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
ডিসেম্বরে রাজ্যের সরকার পড়ে যাবে, লোকসভার সঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন একসঙ্গে হবে, এরপরে রাজ্যে বহু পরিবর্তন হবে, এই ধরনের যুক্তিহীন কথাবার্তা এর আগেও বলেছেন শুভেন্দু। আর এখন রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ভীতি ধরানোর জন্য বেতন বন্ধের কথা বলছেন।
এই বিষয় নিয়েই বালুরঘাটের বিজেপি বিধায়ক তথা বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অশোক লাহিড়ীকে সংবাদমাধ্যমের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, রাজ্য সরকার বাৎসরিক ঋণ গ্রহণের জন্য কি পরিকল্পনা নিয়েছেন সেটা সঠিকভাবে জানা না থাকলে কিছুই বলা যায় না। তবে রাজ্যের আর্থিক অবস্থা খারাপ। তবে বেতন বন্ধের কথা বলা মুশকিল। সেটা হলেও হতে পারে বলে এক রকম পাশ কাটিয়ে গিয়েছেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
শুভেন্দু এই বিষয়ে বলেছিলেন, রাজ্য সরকার FRBM আইনে ঋণ নেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়ে ফেলেছে। প্রায় ৬ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ রয়েছে রাজ্যের। রিজার্ভ ব্যাংকের কাছে ১০০০০ কোটি টাকা ঋণ চেয়েছে সরকার। তাই জানুয়ারি মাসের বেতন রাজ্য দিতে পারবেনা। তিনি আরও জানান, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে বলবেন রাজ্যকে যাতে ঋণ দেওয়া না হয়। RBI নাকি রিপোর্ট দিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি!
প্রসঙ্গত, শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ নয়, দেশের সমস্ত রাজ্য এইভাবে ঋণ গ্রহণ করে থাকে। এর আগে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সরকারও রাজ্যের প্রয়োজনে ঋণ সংগ্রহ করেছে। ফলে শুধুমাত্র ঋণ নেওয়ার আবেদন জানানো মানেই রাজ্যের সরকারি কর্মীদের বেতন বন্ধ হয়ে যাবে, এরকম ধারণাটা যে একেবারে সঠিক, সেটা মেনে নেওয়া যায় না বলেই মনে করছে অভিজ্ঞ মহল।
দুদিনের মধ্যেই ডিএ, Dearness Allowance নিয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার, জরুরী বৈঠক নবান্নে।
বিজেপির বিধায়কই স্পষ্টভাবে শুভেন্দুর এই বক্তব্যকে সঠিক বলে জানাননি। এই বিষয় সম্বন্ধে স্পষ্ট ধারণা না থাকলে যে এই ধরনের মন্তব্য করা যায় না তা তার কথা থেকেই বোঝা গিয়েছে। তাই অনেকেই মনে করছেন, শুভেন্দুর এই বক্তব্যের পিছনে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে। কিছু না জেনে এরকম কথা বলা যায় না, শুভেন্দুর বক্তব্যে সমর্থন নেই বিজেপি বিধায়কের।
এবারে প্যান কার্ড নিয়ে কেন্দ্রের লাল সতর্কতা। গুরুত্ব না দিলে ব্যাংক একাউন্ট ফাঁকা।
তবে একথা স্পষ্ট রাজ্যের আর্থিক অবস্থা ভালো নেই। আর এই মুহুর্তে রাজ্যের আবেদনে ১০০০০ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর হবে কিনা, সেটা বলা মুস্কিল। তবে ডিএ মামলার মধ্যেই এই খবর ছড়িয়ে দেওয়াকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত হতে বারে বলে মনে করছে সরকারী কর্মীদের একাংশ। কারন এতে আন্দোলনের মনোবল ভেঙ্গে যেতে পারে।
Written by Rajib Ghosh.
Betan bandha habe na