চলতি বছরের রাজ্য বাজেটে রাজ্য সরকারি কর্মীদের বেড়েছে ৩% বকেয়া ডিএ এর হার। কিন্তু কর্মীদের দাবি অনুযায়ী এখনও পাননি সম্পূর্ণ বকেয়া ডিএ। তার জন্য লাগাতার ধর্ণা, অনশন আন্দোলন চালানো হচ্ছে। এবার বকেয়া ডিএ এর দাবিতে কর্মবিরতির প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশ। এর আগেও আদালতের তরফে রাজ্য সরকারকে কর্মীদের মহার্ঘ্য ভাতা মিয়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তা মানা হয়নি। বরং দেশের শীর্ষ আদালতে মামলা গেছে। তবে কি এবার কর্মীদের আন্দোলন, কর্মবিরতির দাবি পূরণ হচ্ছে? কি অর্ডার দিলো আদালত?
বকেয়া ডিএ নিয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণঃ
রাজ্য সরকারি কর্মীরা বহুদিন ধরে বকেয়া মহার্ঘ্য ভাতা মেটানোর দাবি জানাচ্ছিলেন। তাদের দাবি পূরণ না করার জন্য ফ্রেব্রুয়ারি মাসে ২ দিন কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছিল। এরপর গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বাজেটে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ৩% ডিএ বাড়ানো হয়েছিলো। কিন্তু তা মেনে নেননি কর্মীরা। বরং তারা জানান, এই ভিক্ষাবৃত্তি তারা গ্রহণ করবেন না। তাদের দাবি ছিল কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ডিএ এর সমান হারে রাজ্যের সরকারি কর্মীদেরও বকেয়া ডিএ প্রদান করতে হবে।
তারা এটাও জানান, অন্যান্য রাজ্যে যেমন AICPI মেনে কর্মীদের মহার্ঘ্য ভাতা দেওয়া হয়, এই রাজ্যের কর্মীদেরও সেই একই নিয়ম মেনে বকেয়া ডিএ ভাতা মেটাতে হবে। দাবি না মানার দরুন আন্দোলন আরো জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেয় কর্মীদের যৌথ সংগঠন। গত মাসের ১০ তারিখ সেই অনুসারে ধর্মঘট ডাকা হয়। এমনকি গতকালও (৬ এপ্রিল) সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ বকেয়া মহার্ঘ্য ভাতার দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দেয়।
একদিকে কর্মবিরতির ডাক, অন্যদিকে হাইকোর্টের তরফে কর্মবিরতির ডাকের ফলে দায়ের করা বকেয়া ডিএ মামলার প্রেক্ষিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এই নির্দেশ মেনে নেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল।
নির্দেশ অনুসারে, আগামী ১৭ এপ্রিল (সোমবার) রাজ্যের মুখ্য সচিব এবং অর্থ সচিব আন্দোলনকারীদের ৩ জন প্রতিনিধির সঙ্গে বকেয়া ডিএ নিয়ে জরুরী আলোচনা করতে চলেছেন।
প্রসঙ্গত, বারবার আন্দোলন-কর্মবিরতির ফলে সরকারি দফতরগুলিতে কার্য ব্যাহত হচ্ছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার। এদিন কর্মবিরতির ফলে রাজ্যের সরকারি দফতরগুলির কাজে কোনরকম ব্যাঘাত ঘটছে কিনা তা জানতে চান প্রধান বিচারপতি। এর উত্তরে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, কর্মীরা অফিসে এলেও কাজ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও কর্মচারী সংগঠনের আইনজীবী আদালতে জানান, এদিন কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছিল আন্দোলনের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী বেশ কিছু আপত্তিকর মন্তব্যের কারণে।
ChatGPT Api এর মাধ্যমে ঘরে বসে কিভাবে টাকা রোজগার করবেন? ইনকামের পরিমান জানলে চমকে উঠবেন।
সমস্ত সরকারি দপ্তরের বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা গ্রহণের সুবিধা না থাকার কথাও জানান রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল। পাল্টা প্রশ্ন করা হয়, সেক্ষেত্রে কত জন কর্মী দফতরে এসেছেন এবং কাজ করছেন তা কীভাবে জানা যাবে? এরপর বিচারপতি হাসপতালগুলির পরিস্থিতি জানতে চাইলে জানানো হয় রাজ্যের সমস্ত জরুরী বিভাগগুলি সচল রয়েছে। কোনো অসুবিধা নেই। মামলাকারী এও জানান, এই কর্মবিরতির ফলে রাজ্যের ৪৩৬ কোটি টাকার ক্ষতি হবে।
সেই মামলার শুনানিতেই হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ সরকারি কর্মীদের সঙ্গে রাজ্য সরকারকে আলোচনায় বসার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এছাড়া আলোচনায় যাতে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সে দিকেও বিশেষ নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, এপ্রিলের আগামী ১০ এবং ১১ তারিখ বকেয়া ডিএ সহ অন্যান্য দাবিতে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ দিল্লিতে ধর্না অবস্থানে যোগদান করতে চলেছেন। সেখানে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবং শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের কাছে ডেপুটেশন দেবেন। কর্মীদের এই সিদ্ধান্তে কি দেওয়া হবে বকেয়া DA?
এই সংক্রান্ত খবরের নতুন আপডেট সবার আগে পেতে হলে এই ওয়েবপোর্টালটি ফলো করতে ভুলবেন না।
Written by Manika Basak.