2016 সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গে বকেয়া ডিএ বা Dearness Allowance নিয়ে মামলা চলছে। একাধিক বার আদালতে রায় দিলেও বিভিন্ন কারন দেখিয়ে তা এড়িয়ে গেছে রাজ্য সরকার। কদিন আগে ফের ডিএ মামলায় রাজ্যকে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মেটানোর নির্দেশ দিলেও চুপ থেকেছে রাজ্য সরকার। তবে তৃণমূল নেতা তথা সাংসদ সৌগত রায় জানিয়েছিলেন, রাজ্য ডিএ দিতেই চায় কিন্তু আর্থিক পরিস্থিতি তেমন নেই। আর আজ সম্পূর্ণ Dearness Allowance মেটানোর প্রতিশ্রুতি দিলেন হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা। তার এই বক্তব্য পঞ্চায়েত ভোটের আগে যথেষ্ট ইঙ্গিতবহ।
Dearness Allowance in West Bengal.
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারী কর্মী ও পুলিশদের সমস্ত বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দেবে, জানিয়ে দিলেন বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা ও তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। কোনো জনপ্রতিনিধি নন, কোনো মন্ত্রী নন, কোনো সরকারি আমলা নন, তবুও সরকার বকেয়া DA যে মিটিয়ে দেবে সেই বিষয়টি জানাচ্ছেন তিনি। প্রায় ১০০ দিন ধরে আসানসোল জেলে জেলবন্দি হয়ে রয়েছেন অনুব্রত। গরু পাচার মামলায় গত ১০ আগস্ট বোলপুরের বাড়ি থেকে অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করে সিবিআই।
তারপর থেকেই আসানসোল জেলে বন্দি রয়েছেন তিনি। যখন তাকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষার জন্য নিয়ে আসা হয়, ঠিক সেই সময় তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীরা। তাদের দিকে তাকিয়েই অনুব্রত মণ্ডল বলেন, সরকার বকেয়া Dearness Allowance মিটিয়ে দেবে। এই কথা শুনে ওই পুলিশকর্মীরা মুচকি হাসেন। পুলিশ কর্মীদের ও যে সরকারের কাছ থেকে বকেয়া Dearness Allowance পাওনা রয়েছে, সেই সেন্টিমেন্ট অজানা নয় কেষ্টদার।
দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা বকেয়া ডিএ দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করছেন। কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে। সেই মামলায় হাইকোর্ট তিন মাসের মধ্যে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশ কার্যকর না করে সরকারের পক্ষ থেকে পিটিশন দাখিল করা হয়। তারপরেও হাইকোর্ট ওই নির্দেশ বহাল রাখে। পরবর্তীতে মুখ্যসচিব এবং অর্থসচিব হাইকোর্টে হলফনামা দাখিল করেন।
আরও পড়ুন, SBI এর নতুন নিয়ম, সমস্যায় পড়লো অসংখ্য গ্রাহক।
সেখানে তারা জানান বকেয়া Dearness Allowance মামলা নিয়ে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে। সেখানেই তার ফয়সালা হবে। কোনো জনপ্রতিনিধি বা মন্ত্রী না হয়েও শুধুমাত্র দলের পদে থেকে সরকারি মহার্ঘভাতা মিটিয়ে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত জানানোকে কেন্দ্র করে বিরোধী রাজনৈতিক দল অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে তোপ দাগা শুরু করেছে। বিজেপি, সিপিএম সহ বিরোধী দলের নেতারা বলছেন, এর থেকেই বোঝা যায় অনুব্রত মণ্ডল কতটা প্রভাবশালী। এর আগে এই প্রভাবশালী তত্ত্বে জামিন আটকে গিয়েছে অনুব্রতর।
গরু পাচার মামলায় আসানসোল জেলে বন্দি তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সেই জেলেরও বেশ কিছু সমস্যা নিয়ে এদিন জানিয়েছেন অনুব্রত। তিনি বলেন, এখন জেলে রয়েছি। জেলের বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। এখান থেকে বেরোলে সেই বিষয়ে সমাধান করার চেষ্টা হবে।
যখনই অনুব্রত মণ্ডলকে আদালতে নিয়ে আসা হচ্ছে, তখনই দেখা যাচ্ছে, বীরভূমের তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে দেখা করছেন। সেখানে তিনি আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে কিভাবে বিরোধীদের মোকাবিলা করতে হবে, সেই বিষয়েও পরামর্শ দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন, বকেয়া ডিএ তো দূরে থাক, সরকারি কর্মীরা পাবেন না বেতন, পেনশন ও গ্রাচ্যুইটিও?
এই ব্যাপারে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো পঞ্চায়েত নির্বাচনে সন্ত্রাস হবে বলে অভিযোগ করতে শুরু করেছেন। যদিও ধারাবাহিকভাবেই এর আগেও দেখা গিয়েছে, অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে বিরোধী দল নিয়মিত অভিযোগ করতে থাকে। তবে এবার সরকারের কর্মীদের বকেয়া Dearness Allowance মিটিয়ে দেওয়ার মন্তব্যটি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে অভিজ্ঞ মহল। তবে তার এই বক্তব্যের পর কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি তৃণমূলের পক্ষ থেকে, তবে এটা কি আন্দাজে ডিল মারা নাকি ইঙ্গিতবহ, তা তো সময় বলবে।
Written by Rajib Ghosh.
If there is no CM ( Cut Money ) in DA , hike in DA is almost impossible.