পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ (Dearness Allowance) নিয়ে সুপ্রীম কোর্টে শুনানি হলো। আর প্রথম দিনেই আদালত নির্দেশ দিলো, যেহেতু সুপ্রীম কোর্টে মামলা চলছে, তাই হাইকোর্টে আর কন্টেম্পট পিটিসনের প্রয়োজন নেই। আজ কি নির্দেশ দিলো জেনে নিন।
শুনানি শুরু হয়ে গেল ডিএ মামলার। সুপ্রিম কোর্টে আজ সোমবার ৫ ডিসেম্বর Dearness Allowance মামলার শুনানি হয় বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী এবং বিচারপতি হৃষিকেশ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল করেছে রাজ্য সরকার। প্রথমে সেখানে কিছু টেকনিক্যাল ত্রুটি থাকার কারণে শুনানি শুরু হতে দেরি হয়ে যায়। পরবর্তীতে রাজ্য সরকারের তরফে SLP পুনরায় সঠিকভাবে দাখিল করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা এই DA মামলার দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন।
তার কারণ কলকাতা হাইকোর্টের তরফে তিন মাসের মধ্যে বকেয়া Dearness Allowance মিটিয়ে দেওয়ার জন্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হলেও পুনর্বিবেচনার আবেদন করে রাজ্য সরকার। সেই আবেদন হাইকোর্ট খারিজ করে দিলে সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে যাওয়া হয়। এবার সেই ডিএ মামলার শুনানি শুরু হয়েছে। আজ। আর পরবর্তী শুনানী ১৪ই ডিসেম্বর।
Dearness Allowance
ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং তাদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম এবং বিকাশ বাবু জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ন্যায্য অধিকার Dearness Allowanc. এর আগে আদালতে একাধিক বার সেটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সরকারের তরফে ডিএ মামলাকে অযথা টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ফলে এটা দেরী হয়ে যাচ্ছে।
ফিরদৌস শামিমের কথায়, বামফ্রন্ট সরকারের আমলে রোপা রুলস তৈরি হয়েছিল। ২০০৯ সালে নির্দিষ্টভাবে সেখানে বলে দেওয়া হয়েছে, সর্বভারতীয় জিনিসপত্রের দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের DA দিতে হবে। এই বিষয়টা সাধারণ মানুষকে বললে তারাও বুঝবেন। কিন্তু রাজ্য সরকার বিষয়টি বুঝতে চাইছে না। ডি এ মামলা নিয়ে দেরি হওয়ার ফলে এরিয়ার বাড়ছে। এই চাপ সাধারণ মানুষের উপরে গিয়েই পড়ছে। সরকারের একগুয়েমির জন্যই এটা হচ্ছে। আদালতের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, সর্বভারতীয় দ্রব্যমূল্য সূচকের উপর নির্ভর করেই কর্মচারীদের Dearness Allowance দেওয়া উচিত।
প্রসঙ্গত ২০১৬ সালে প্রথমে স্যাটে মামলা হয়। পরবর্তীতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হলে সেখানেও ডিএ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে সেই নির্দেশে কিছু অস্পষ্টতা রয়েছে বলে সরকারের তরফে Dearness Allowance নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হয়। এবার সুপ্রিম কোর্টে Dearness Allowanc মামলার শুনানি শুরু হতে চলেছে। প্রসঙ্গত, এ দিন কনফেডারেশনের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম তার বক্তব্যে সাধারণ মানুষের কথাও তুলে ধরেছেন। তার কারণ, দেশজুড়ে লাগাম ছাড়া মূল্যবৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষ, মধ্যবিত্ত, গরিব শ্রেণীর মানুষেরা যার উপর নাই দুর্দশার সম্মুখীন হচ্ছেন।
এবার ডিমের দাম রেকর্ড ভাঙবে, গরিব মানুষ খাবে কি, হুশ নেই কারোর।
অথচ সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে যদি সরকারি কর্মচারীদের সর্বভারতীয় দ্রব্যমূল্য সূচকের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে DA দেওয়ার দাবি জানানো হয়, সেক্ষেত্রে সেই বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে অন্য প্রতিক্রিয়া ফেলতে পারে। কারণ সরকারি চাকরিজীবীরা একটা ভালো অংশের বেতন পেয়ে থাকেন। তার উপরে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে Dearness Allowanc দেওয়ার দাবি করার ফলে যদি সাধারন মানুষের উপরে তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় সেই দিকে নজর দিয়েই এই ধরনের মন্তব্য সরকারি কর্মচারী সংগঠনের আইনজীবীর পক্ষ থেকে করা হয়েছে বলেই মনে করছে অভিজ্ঞ মহল।
সব রাজ্য ডিএ পায়, পশ্চিমবঙ্গে কেন নয়? কি হল সুপ্রিম কোর্টের ফাইনাল ডিসিশন। বিস্তারিত দেখুন।
আজ সুপ্রীম কোর্টের ৭ নম্বর কোর্টে ৩৪ নম্বরে ছিলো মামলাটি।এদিন দুপুর ২ টো ৫২ মিনিট পর্যন্ত শুনানি হয়। এবং সেখানে সমস্ত পার্টি কে আগামী ১৪ই ডিসেম্বরের মধ্যে নিজেদের যুক্তি লিখিত আকারে আদালতে পেশ করতে হবে। এরপর দ্রুততার সহিত আদালত সিদ্ধান্ত নেবে। আর এর থেকেই স্পষ্ট আদালত একপ্রকার ইঙ্গিত দিতেই দিয়েছে, এই রায় কর্মীদের পক্ষেই যাবে। এখন এটাই দেখার দিল্লী থেকে Dearness Allowance এর নির্দেশ কবে আসে।
Written by Rajib Ghosh.