বকেয়া DA নিয়ে অভিনব প্রতিবাদ।
Third Prize Goes to.. অর্থাৎ তৃতীয় পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে রাজ্যের নেতা মন্ত্রীদের।
দ্বিতীয় পুরস্কার যৌথভাবে দেওয়া হলো রাজ্যের বিভিন্ন মন্ত্রীদের।
এবার প্রথম পুরস্কারের পালা। কাকে দেওয়া হবে প্রথম পুরস্কার? কে পাচ্ছেন First Prize? প্রথম পুরস্কার যাচ্ছে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে।
এত দূর পর্যন্ত শুনে কি মনে হচ্ছে? কোনো প্রতিযোগিতা মূলক অনুষ্ঠান? না, একেবারেই নয়। এই অভিনব প্রতিবাদ জানালেন Dearness Allowance আন্দোলনকারীরা।
বকেয়া ডিএ মেটানোর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন কর্মসূচি করছেন রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। একদিকে আইনি লড়াই চলছে, অন্যদিকে তার মধ্যেই রাস্তায় বসে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন সরকারী কর্মচারীরা। কলকাতার শহীদ মিনার চত্বরে ২৭ জানুয়ারি থেকে ডিএ এর দাবিতে ধরনা বিক্ষোভ চালাচ্ছেন সরকারি কর্মচারীদের একাংশের সংগঠন যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ।
DA Agitation in West Bengal:
আর এই পরিস্থিতির মধ্যেই রাজ্য বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করেন রাজ্যের অর্থ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। আর সেই ঘোষণা অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই নবান্নের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। সেই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মার্চ মাস থেকেই রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা ৬ শতাংশ ডিএ পাবেন। ষষ্ঠ বেতন কমিশনের আওতায় ১ মার্চ থেকেই এই ৬ শতাংশ ডিএ পাবেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। তবে সরকারি কর্মচারীদের একাংশের দাবি, তারা এই ডিএ নিতে চান না।
২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের আওতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ৩ শতাংশ DA ঘোষণা করে। তারপর এবার রাজ্য বাজেটে ফের ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করা হয়।
কিন্তু রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের দাবি অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় হারে DA প্রদান করতে হবে সরকারকে। আন্দোলনরত কর্মচারীদের বক্তব্য, সরকার প্রথম থেকে যে ৬ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বলছে, সেটা মিথ্যা। সরকার HR- এর টাকা ১৫ শতাংশ থেকে ৩ শতাংশ কমিয়ে ১২ শতাংশ করেছে। আর সেটাকেই DA বলে চালিয়ে দিচ্ছে। আমরা ৩৯ শতাংশ DA চাই।
আর সেই দাবিতেই রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা আগামী ১০ মার্চ রাজ্যজুড়ে ধর্মঘটের(Strike) ডাক দিয়েছেন। স্কুল-কলেজ সহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। যদিও রাজ্য সরকার এই বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। সরকারের তরফে বাজেটে ৩ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধির পরেও রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ সেই DAতে খুশি হননি। তারপরেই তারা বৃহৎ আন্দোলন কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেন। ২০ এবং ২১ ফেব্রুয়ারি রাজ্যজুড়ে কর্মবিরতি পালন করা হয়। যদিও দাবি করা হয়েছে, প্রায় ৯৫ শতাংশ অফিসেই কাজকর্ম স্বাভাবিক হয়েছে। বিক্ষিপ্ত কিছু জায়গায় কর্মবিরতি পালিত হয়েছে।
আর এর পরেই দেখা গেল, DAর দাবিতে আন্দোলনরত কর্মচারীরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কার্টুন আঁকা পোস্টার লাগিয়ে আন্দোলন মঞ্চে প্রতিবাদ জানান। শনিবার সরকারি কর্মীরা লুটারি কর্মসূচি পালন করেন। আর সেই কর্মসূচিতেই অভিনব ভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছেন সরকারি কর্মচারীদের একাংশ।
ওই প্রতিবাদ কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারের হেভিওয়েট মন্ত্রীদের প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পুরস্কার দিয়ে DA না পাওয়ার প্রতিবাদ জানালেন তারা। আন্দোলনকারী সরকারি কর্মীদের অভিযোগ, রাজ্যে এখন লুট চলছে। তাই কর্মসূচির এই নাম।
DA এর দাবিতে আন্দোলনকারী সরকারী কর্মচারীরা বলছেন, রাজ্যের কোষাগার ফাঁকা। তাই সরকার কর্মচারীদের DA দিতে পারছে না। আর এর জন্যই খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যাচ্ছে প্রথম পুরস্কার। দ্বিতীয় পুরস্কার যৌথভাবে দেওয়া হচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন মন্ত্রীদের। আর তৃতীয় পুরস্কারও রাজ্যের নেতা মন্ত্রীরাই পেলেন। আন্দোলনকারীরা বলছেন, বিভিন্ন নেতা-মন্ত্রীরা যেভাবে বিবৃতি দিচ্ছেন, তাতে তাদের মানসিক চিকিৎসার দরকার রয়েছে।
আন্দোলন মঞ্চে DA আন্দোলনকারীরা এই ধরনের অভিনব উপায়ে প্রতিবাদ জানালেন।
Written by Rajib Ghosh.