রাজ্য সরকারকে চাপে ফেলতে গিয়ে DA Strike ইস্যুতে এবার সরকারি কর্মচারীদের একাংশের সংগঠন যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ নিজেরাই চাপে পড়ে গিয়েছে। আগামী ১০ মার্চ রাজ্যের স্কুল, কলেজ এবং বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে ধর্মঘটের (DA Strike) ডাক দিয়েছে সরকারি কর্মচারীদের একাংশের সংগঠন যৌথ মঞ্চ। তাদের সেই ধর্মঘটকে ইতিমধ্যেই সমর্থন জানিয়েছে সিপিআইএম ও বাম প্রভাবিত কর্মী সংগঠনগুলি। বুধবার বিজেপি প্রভাবিত সরকারি কর্মচারী পরিষদ এই ধর্মঘটকে সমর্থন করেছে বলে জানা গিয়েছে। আর অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস প্রভাবিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন এই ধর্মঘটের বিরোধিতা করার জন্য সক্রিয়ভাবে ময়দানে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দিন কয়েক আগেই দুই দিনের কর্ম বিরতির ডাক দিয়েছিল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। সেই কর্ম বিরতিতে সেভাবে কোনো প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি। ৯৫ শতাংশ সরকারি অফিসে স্বাভাবিক হাজিরা ছিল বলেই বিভিন্ন সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। যদিও কর্মীদের দাবী সেদিন তারা অফিসে গিছেন, হাজিরা খাতায় সই করেছেন, কিন্তু পেন ডাউন ছিলো, অর্থাৎ কোনও কাজ করেন নি। সেই জন্য ৯৫% হাজিরা দেখাচ্ছে। আবার যৌথ মঞ্চের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, ওই DA Strike কর্ম বিরতির দিন তাদের যে গুটিকয়েক সরকারি কর্মচারী অংশ নিতে গিয়েছিলেন, তাদের উপরে হামলা করা হয়েছে, ভাঙচুর চালানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত বকেয়া ডিএ নিয়ে লড়াই দীর্ঘদিনের। ২০১৬ সালে বকেয়া ডি এর দাবিতে স্যাটে (SAT) মামলা করে কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়ীজ। সেই মামলার রায় পরবর্তীতে কলকাতা হাইকোর্ট বহাল রাখে। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশের বক্তব্য ছিল, সরকার ৩ শতাংশ DA দিলেও সেই সময় কেন্দ্রীয় হারে DA দেওয়া হয়নি। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের DA-র ফারাক ৩১ শতাংশে দাঁড়িয়েছিল। তাদের দাবি, কেন্দ্রীয় হারেই Dearness Allowance দিতে হবে। কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে SLP দাখিল করা হয়। সেই মামলার শুনানি আগামী ১৫ই মার্চ হওয়ার কথা রয়েছে।
DA Strike in West Bengal:
আর এর মধ্যেই বকেয়া ডি এর দাবিতে রাস্তায় নেমে কাজকর্ম লাটে তুলে দিয়ে আন্দোলন শুরু করে দিয়েছেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। সরকারি কর্মচারীদের একাংশের দাবি, তাদের কেন্দ্রীয় হারে DA দিতে হবে। আর সেই দাবিতে শহীদ মিনার চত্বরে বেশ কিছুদিন ধরেই তারা ধরনা, বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে।
এই আবহে রাজ্য বাজেটে অর্থ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ৩ শতাংশ DA ঘোষণা করেন। মার্চ মাস থেকে সেই DA লাগু হয়ে যাবে বলে জানান তিনি। কিন্তু ৩ শতাংশ ডিএতে খুশি হতে পারেনি সরকারি কর্মচারীদের একাংশ।
তারা এরপরেই বৃহৎ আন্দোলন কর্মসূচি করার হুঁশিয়ারি দেয়। তারপরেই দুই দিনের কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছিল। যদিও জানা গিয়েছে, সেই কর্ম বিরতিতে সেভাবে কোনো প্রভাব পড়েনি রাজ্যের সরকারি দপ্তরগুলিতে। আর এবার আরো একধাপ এগিয়ে ১০ মার্চ স্কুল-কলেজসহ রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে ধর্মঘটের (DA Strike) ডাক দেওয়া হয়েছে সরকারি কর্মচারীদের একাংশের সংগঠন সংগ্রামী যৌথ বঞ্চের তরফে।
আর ১০ই মার্চ স্কুল-কলেজ এবং বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে DA Strike ধর্মঘটের ডাক দেওয়ার বিষয়টি সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফে রাজ্যের মুখ্য সচিবকে জানানো হয়েছে। তাকে সরকারি কর্মচারীদের একাংশের সংগঠন যৌথ মঞ্চের তরফে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। আর সেখানে বলা হয়েছে কর্মীদের ধর্মঘটের অদিকার রয়েছে। আর বকেয়া ডিএ না দিলে অনির্দিষ্টকালীন আন্দোলন ও DA Strike কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেবে কর্মীরা।
আরও পড়ুন, নবান্নের নয়া বিজ্ঞপ্তি 3% নয় 6% DA, তাহলে মিনিমাম কত বাড়ছে বেতন?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার যে বনধ, ধর্মঘটের সংস্কৃতির বিরোধী, সেটা এর আগে একাধিকবার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষার শুরুর দিনেই পাহাড়ে বনধের ডাক দেওয়া হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পরেই সেই পাহাড় বনধের ডাক প্রত্যাহার করে নিয়েছে বিনয় তামাং, অজয় এডওয়ার্ডরা। মুখ্যমন্ত্রী একাধিক বার জানিয়ে দিয়েছেন, কোনোভাবে কোথাও ধর্মঘট বনধ করলে পুলিশ প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ নেবে।
ফলে সিপিআইএম এবং বিজেপির প্রভাবিত সরকারি কর্মচারী সংগঠনের সমর্থনে যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের রাজ্য সরকারি দপ্তরে ডাকা এই DA Strike ধর্মঘট আদৌ সফল হয় কিনা সেদিকেই নজর রয়েছে সবার। তবে রাজ্য সরকার তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কয়েকদিন আগেই রাজ্য সরকারী কর্মীদের বকেয়া ডিএ নিয়ে রাজ্য সহানুভূতিশীল, তবে আর্থিক পরিস্থিতির কারনে ডিএ মেটানো যাচ্ছে না, একথা বলেন। তবে একদিকে রাজ্যের কর্মীদের দাবী অন্যদিকে পরিষেবা, এই দুই এর সাম্যতা বজায় রাখতে রাজ্য কি সিদ্ধান্ত নেয়, এবার এটাই দেখার।
Written by Rajib Ghosh.
দেশের 5টি ব্যাংক কে 6 মাসের জন্য কঠোর শাস্তি, টাকা তুলতে পারবেন না গ্রাহকেরা।
There should not be any bandh for the benefit of 1% people of Bengal. For somebody’s benefit why 10 CR people would sacrifice. Better you find out the reason for not getting the enhanced increment by yourself.