পশ্চিমবঙ্গে বকেয়া ডিএ নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত।
মামলায় জয় পাওয়ার পরও মেলেনি বকেয়া ডিএ (Dearness Allowance). কেটে গেছে ৫টি বছর। একের পর এক মামলা চলেছে। তাই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের এখন একটাই লক্ষ্য, বকেয়া DA কবে তারা পাবেন? এছাড়া আর অন্য কোনো লক্ষ্য বা কর্মসূচি তাদের নেই। এই মুহূর্তে অন্য কিছু তারা ভাবতেও চান না।
আর তাই বকেয়া ডিএ এর দাবিতে ২৭ জানুয়ারি একাধিক সরকারি কর্মী এবং শিক্ষক শিক্ষিকাদের সংগঠন গণছুটির ডাক দিয়েছে। কলকাতা হাইকোর্ট অনুমতি দিয়েছে DA নিয়ে আন্দোলন করার। অবস্থান বিক্ষোভ করা যাবে বলে জানিয়ে দিয়েছে আদালত। আর পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী এদিন সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন আন্দোলনে নেমেছেন। এবং সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, লাগাতার রাত দিন ২৪ ঘন্টা অবস্থান চলবে।
এদিকে বকেয়া ডিএ নিয়ে মামলা চলছে শীর্ষ আদালতে। এখনো পর্যন্ত সেখানে শুনানি শুরু হয়নি। হাইকোর্ট রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ দেওয়ার নির্দেশ দিলেও রাজ্য সরকারের তরফে হাইকোর্টের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে SLP দাখিল করা হয়। আগামী ১৫ই মার্চ সেই মামলার শুনানি হতে পারে সুপ্রিম কোর্টে।
এবার তার আগেই কলকাতার রাজপথে নেমেছে সরকারি কর্মচারী সংগঠনের একাংশ। রাজ্যে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বরাদ্দ আটকে রয়েছে। ফলে রাজ্যের একাধিক প্রকল্পে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না সরকারের পক্ষে। একের পর এক কেন্দ্রীয় টিম পাঠানো হচ্ছে। যারা এসে রাজ্যের সমস্ত ব্যবস্থা খতিয়ে দেখছে। এরকম একটা পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারি কর্মীরা বকেয়া DA নিয়ে একদিকে যেমন আদালতে আইনি লড়াই চালাচ্ছেন, অন্যদিকে রাস্তায় নেমে আন্দোলন সংগ্রাম করতেও দেখা যাচ্ছে তাদের।
এই মুহূর্তে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা ৩ শতাংশ ডিএ পাচ্ছেন। এই প্রসঙ্গে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক বলেছিলেন, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ডাকে ২৭ জানুয়ারি গণ ছুটি এবং মিছিল লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির বিষয়ে জেলা কমিটির মিটিং ডেকে ওই কর্মসূচির সফল করার জন্য প্রতিটি জেলার তাদের সংগঠনের সম্পাদক এবং সভাপতির উদ্দেশ্যে আবেদন করেছিলেন। ব্যাপক প্রচার শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পে মিলবে বার্ষিক 10 হাজার টাকা, জেনে নিন আবেদন পদ্ধতি।
বিভিন্নভাবে ডিজিটাল মিডিয়ায়, সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করার নির্দেশ ছিল। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ২৭ তারিখের কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হবে না। সরকারিভাবে ২৭ তারিখ কোনো ছুটি ঘোষণা হয়নি। সরকারি কর্মচারীদের সংগঠনের তরফে বলা হয়েছিল, শুধুমাত্র আদালতের রায়ের উপর ভরসা করে নিষ্ক্রিয় থাকলে চলবে না। বকেয়া ডিএ এর দাবি আদায়ের জন্য রাস্তায় নেমে লড়াই করতে হবে। আর তাই এদিন সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে দেখা গেল সরকারি কর্মচারী সংগঠনের একাংশের জমায়েত।
সারা দেশে ব্যাংক ধর্মঘট, মহাসংকটে দেশবাসী। কবে কবে ব্যাংক বন্ধ জেনে নিন।
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারী কর্মীদের ইউনিটি ফোরামের অনিরুদ্ধ ভট্টাচার্য জানান, বকেয়া ডিএ পেতে আদালতের পাশাপাশি রাস্তায় আন্দোলন ও চলবে। প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন উস্থি এর বেলা সাহা সাংবাদিকদের প্রশ্নে অভিযোগ করেন, শিক্ষক ও কর্মীদের বকেয়া ডিএ এর টাকা চুরি করে রাজ্য সরকার প্রকল্পের নামে দান খয়রাতি করছে। আমাদের কর্মসূচীর মূল লক্ষ্য শুধু বকেয়া ডিএ নয়, সমস্ত শূন্যপদে দুর্নীতিমূলক নিয়োগ করা। রাজ্যের মানুষ দান খয়রাতি চায় না, কর্মসংস্থান চায়, কাজ চায়।
মাত্র ৫ বছর টাকা জমিয়ে হয়ে যান ২২ লাখ টাকার মালিক।
যদিও রাজ্য বার বার জানিয়েছে রাজ্য সরকারী কর্মীদের প্রতি রাজ্য সংবেদনশীল, রাজ্যের আর্থিক অবস্থা খারাপ বলে ডিএ দিতে পারছে না। আদালতেও তাই জানিয়েছে। সব মিলিয়ে বকেয়া ডিএ ইস্যু সারা রাজ্যে এক অন্যতম বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। এবার এটাই দেখার রাজ্য সরকারী কর্মীদের এই সিদ্ধান্তে সরকার কি পদক্ষেপ নেয়।
Written by Rajib Ghosh.