২০১৬ সাল থেকে বকেয়া ডিএ (Dearness Allowance) এর দাবিতে মামলা করে রাজ্য সরকারী কর্মীরা, আর তার পর থেকেই আইনী লড়াই চলে DA Protest, DA Agitation বা বকেয়া ডিএর দাবিতে কর্মসূচী। দীর্ঘ ৭ বছর তারিখ পে তারিখের পর বর্তমানে সুপ্রীম কোর্টে রয়েছে সেই মামলা। আর এরই মধ্যে গত ২৭ শে জানুয়ারী থেকে কলকাতায় অবস্থান, বিক্ষোভ ও একাধিক কর্মসূচী লাগাতার করছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারী কর্মীদের যৌথ সংগঠন। তাদের মুলত ২টি দাবী, প্রথমত AICPI হারে DA দিতে হবে, এবং সমস্ত শূন্যপদে অবিলম্বে দুর্নীতিমুক্ত নিয়োগ করতে হবে।
আর সেই প্রতিবাদে বা দাবিতে প্রতি অনশন ও ২ ঘন্টার কর্ম বিরতির পর, আজ রাজ্য জুড়ে সমস্ত সরকারী অফিস, স্কুল কলেজ, স্বাস্থ্য কেন্দ্রে জরুরী পরিষেবা ব্যাতীত সমস্ত পরিষেবা বন্ধ করার ডাক দিয়েছে যৌথ কর্মী সংগঠন। আর যদি একযোগে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এই DA Protest কর্মবিরতি পালিত হয়, তবে সারা রাজ্যের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সরকারী অফিসের স্বাভাবিক পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ার আশংকা করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
কর্মীদের দাবি আদায়ে ব্যাংক ধর্মঘট, রেল অবরোধ অনেক বার দেখেছে বাংলা, কিন্তু সমস্ত সরকারী কাজ অচল করার সিদ্ধান্ত এর আগে হয়েছে কিনা, সন্ধেহ। তাই এই DA Protest কর্মসূচী যদি সফল হয়, তবে পরিষেবার ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হতে পারে, এমনটাই জানানো হয়েছে TV9 Bangla চ্যানেলের এক প্রতিবেদনে।
DA Protest এ সব অফিস কি বন্ধ থাকবে?
গতকাল এক টিভি চ্যানেলের এক সাক্ষাৎকারে এবং সরকারী কর্মীদের স্যোশাল মিডিয়ার বিভিন্ন গ্রুপে জানানো হয়েছে, সোমবার অর্থাৎ ১৩ই ফেব্রুয়ারী সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সারা রাজ্য জুড়ে এই কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে। সরকারী কর্মীরা অফিস গিয়ে (DA Protest) উপস্থিতি অর্থাৎ Attendance দেবেন, সই করবেন, কিন্তু কাজ করবেন না। যে শিক্ষকরা স্কুলে গিয়ে উপস্থিতির সই করবেন, DA Protest মেনে তাঁদেরও ক্লাস না করার আহ্বান করা হয়েছে। যেসব শিক্ষক ও সরকারী কর্মীরা পূর্ণদিবসের ছুটি নেবেন, তাঁদের শহিদ মিনারে যাওয়ার আহ্বান করা হয়েছে। দূরের জেলার কর্মী, শিক্ষক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিজেদের জেলায় DA Protest মিছিল ও প্রতিবাদ কর্মসূচী করার কথা বলা হয়েছে। এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতালে জরুরি পরিষেবার ছাড়া অফিসিয়াল কাজে যাঁরা যুক্ত, তাঁদেরও কর্মবিরতিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান করা হয়েছে।
আরও পড়ুন, আর বাড়ির কাছে বদলী নয়, শিক্ষক বদলির নতুন নিয়ম রাজ্যে, কারা অগ্রাধিকার পাবেন?
এর আগে ডিএ মামলা চলাকালীন একাধিক কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে। তবে একযোগে সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের কর্মী, পুরসভার কর্মী, আদালতের কর্মী, পঞ্চায়েত কর্মী সহ শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, চিকিৎসক, নার্স মিলিয়ে মোট ২৮টি সংগঠন কোলকাতা শহিদ মিনারে সংগ্রামী যৌথমঞ্চের ব্যানারে আদালতের অনুমতি নিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থানে বসে। পরে আরও বেশ কয়েকটি কর্মী ও চাকরী প্রার্থী সংগঠন সেখানে যোগ দিয়ে, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মোট ৩৪টি সংগঠন সংগ্রামী যৌথমঞ্চের ব্যানারে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থানে বসেছেন। আর ইতিমধ্যে ৩ জন অনশনে বসেছেন এবং আজ পূর্ণ দিবস কর্ম বিরতির মধ্য দিয়ে আন্দোলন আরও কঠিন করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
আর যদি আজ সমস্ত অফিসে এই কর্মবিরতি পালিত হয়, স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্যের পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ার আশংকা থাকছে। এবার এটাই দেখার এই কর্মসূচী কতটা সফল হয়। আর বকেয়া ডিএ ও নিয়োগের দাবী নিয়ে সরকারী কোনও প্রতিক্রিয়া মেলে কিনা। একদিকে কর্মীদের বকেয়া বেতনের দাবি, অন্যদিকে জনগনের পরিষেবা, এই দুইয়ের মাঝে কর্তব্য ও পারিশ্রমিক এর যে দ্বন্দ্ব সেই নিয়ে এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতির আশংকা থেকে যায়। এই ব্যাপারে আপনার মন্তব্য নিচে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।
পরের আপডেট পেতে EK24 News ফলো করুন। দুপুরে আপডেট আসছে।