ডিএ আন্দোলনঃ
বকেয়া DA তরজার মধ্যে এবার নয়া মাত্রা। দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ রাস্তায় বসে আন্দোলন কর্মসূচি করছেন। দপ্তরের কাজকর্ম লাটে তুলে দিয়ে নিজেদের আবদার অনুযায়ী DA দিতে হবে,সেই দাবিতেই তারা একের পর এক আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করছেন। এরমধ্যে রাজ্য বাজেটে ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করা হয়। ইতিমধ্যেই নবান্নের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সেই বর্ধিত হারে DA দেওয়ার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়।
কিন্তু কর্মীদের একাংশের মত, ওই ডিএ তারা নিতে চান না। এই দাবিতেই লাগাতার ডিএ আন্দোলন চালাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশের সংগঠন যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ।
কিছুদিন আগেই ২০ এবং ২১ ফেব্রুয়ারি তারিখে কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছিল। সেই কর্মবিরতিতে কিছু জায়গায় সরকারি কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেছিলেন। সংখ্যায় অল্প হলেও যে সমস্ত স্কুলের শিক্ষকেরা ডিএ আন্দোলন এর এই কর্মবিরতিতে যোগদান করেছিলেন, সেই সমস্ত স্কুল শিক্ষকদের অনেকের হাতেই শোকজ নোটিশ (Show Cause Notice) ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এই নোটিশ কি কারণে দেওয়া হচ্ছে?
মূল কারণ হিসেবে সরকারি দপ্তরের কাজকর্ম বন্ধ করে দিয়ে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি বা কর্মবিরতির ফলে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। আর সেই কারণে রাজ্য সরকার জানিয়ে দিয়েছেন, যেকোনো ধরনের ধর্মঘট বা বনধের ক্ষেত্রে করা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
যে সমস্ত শিক্ষকেরা ডিএ আন্দোলন কর্মবিরতিতে যোগ দিয়েছিলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ বা প্রধান শিক্ষকরা তাদের হাতে শোকজ নোটিশ দিচ্ছেন। এই শোকজ নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষকদের বক্তব্য, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ আমাদের নিয়োগকর্তা। আমরা আপনাকে উত্তর দিতে বাধ্য নই।
ডিএ আন্দোলনকারীদের নোটিশঃ
এই বিষয়ে শিক্ষক সংগঠনের একাধিক নেতা বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন। এক শিক্ষক নেতা জানান, এই শোকজ নোটিশ আইন না জেনেই ধরানো হয়েছে। বিধানসভার আইন জানা উচিত। কর্মবিরতিতে যোগদানকারী শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, প্রধান শিক্ষকরা সহকারী শিক্ষকদের Show Cause করতে পারেন না। সেই ক্ষমতা তাদের নেই। পর্ষদকে এই বিষয়ে তারা জানিয়েছেন, শোকজ বা অনুপস্থিত থাকলে তারা কারণ জানতে চাইবেন। প্রত্যেক সরকারি কর্মীদের আন্দোলন করার অধিকার রয়েছে।
এর মধ্যেই সরকারি কর্মচারীদের একাংশের সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ আগামী ১০ মার্চ রাজ্যের স্কুল, কলেজ সহ সরকারের সমস্ত দপ্তরে ডিএ আন্দোলন তথা ধর্মঘটের (DA Strike) ডাক দিয়েছে। তবে সরকার ইতিমধ্যেই কড়া পদক্ষেপের ঘোষণা করার কথা জানিয়ে দিয়েছে।
সরকারি কর্মচারীদের একাংশের এই আন্দোলন প্রসঙ্গে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম কড়া ভাষায় বিরোধিতা করেছেন। তার কথায়, যারা ৪০ হাজার মাইনে পাচ্ছেন, তাদের ৬০ হাজার টাকা মাইনে করে দিতে হবে, এটার বিপক্ষে তারা।
বে কেন্দ্রীয় সরকার যদি বরাদ্দ দিত, সেক্ষেত্রে হয়তো আলাদা করে ভাবা যেত। রাজ্যে লক্ষ্মীর ভান্ডার, স্বাস্থ্য সাথীর মতো বহু সামাজিক প্রকল্প চলছে। সেগুলি বন্ধ করে দিয়ে এই ধরনের পদক্ষেপ করা যায় না।
এখন আবার দেখা যাচ্ছে, সরকারি কর্মচারীদের একাংশের সংগঠনের যেকোনো আন্দোলন কর্মসূচিকে সিপিএম, বিজেপির মতো বিরোধী দলগুলি ইন্ধন জোগাচ্ছে। এর মধ্যেই একাধিক স্কুলের শিক্ষক শিক্ষাকর্মীরা ৩ শতাংশ ডিএ নিতে অস্বীকার করেছেন। ডিএ আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, ফিরহাদ হাকিম সরকারি চাকরিজীবীদের সেবা করার মানসিকতা রাখতে বলেছেন। তা না হলে চাকরি ছেড়ে দিতে বলেছেন। তাই ৩% DA ছেড়ে দেওয়ার জন্য DI অফিসে আবেদন করেছেন তিনি।
উঠে যাচ্ছে রাজ্যের ৮ হাজার স্কুল, শিক্ষক শিক্ষিকাদের সারপ্লাস ট্রান্সফার শুরু হবে।
কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, ইচ্ছামতন সরকারি দপ্তর বন্ধ করে দিয়ে কাজকর্ম না করে এটা চলতে পারে না। মানুষের ট্যাক্সের টাকায় সরকারি কর্মীদের মাইনে দেওয়া হয়। সেই জায়গায় মানুষের কাজকর্ম বন্ধ করে দিয়ে লাগাতার এই ধরনের আন্দোলন ঠিক নয়।
আগামী ১৫ই মার্চ সুপ্রিম কোর্টে বকেয়া ডিএ মামলার শুনানি হতে পারে। এদিকে ১০ মার্চ ডিএ আন্দোলন ধর্মঘট এর ডাক দিয়েছে যৌথ মঞ্চ। এখন সেদিকেই নজর রয়েছে সকলের।
Written by Rajib Ghosh.
বর্তমানে ব্যাংকে কোন নিয়মে টাকা রাখলে নিরাপত্তার সাথে সেভিংস একাউন্টেই পাবেন সর্বোচ্চ সুদ।