ডিএ আন্দোলনে অনশন (DA Agitation, DA Strike) বন্ধ হলেও আন্দোলন চলবে। আর এরই মধ্যে শুরু হলো ট্রান্সফার প্রক্রিয়া, কর্মীদের বদলির নির্দেশিকা জারি নবান্নের।
ডিএ আন্দোলন (DA Movement) চলছে রাজ্যে। কলকাতার রাস্তায় বসে বিক্ষোভ ধর্না দেখাচ্ছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশের সংগঠন যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ। আর এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার কর্মচারীদের ৪ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা (Dearness Allowance West Bengal) ঘোষণা করে দিয়েছে। যার ফলে রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের DA এর ফারাক আরো বেড়ে গেল। কিন্তু কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের সমস্ত কিছুই আলাদা। তাই কেন্দ্রের হারে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা DA পেতে পারেন না, এমনটাই জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ডিএ আন্দোলন পঞ্চব্যাঞ্জনঃ
আর তারপর থেকেই বকেয়া ডিএ কেন্দ্রীয় হারে মেটানোর দাবিতে একের পর এক আন্দোলন কর্মসূচি (DA Movement) ঘোষণা করে যাচ্ছে যৌথ মঞ্চ। এর মধ্যেই কলকাতার শহীদ মিনার চত্বরে যে বিক্ষোভ মঞ্চ তৈরি করেছিলেন DA আন্দোলনকারীরা, সেখানে লাগাতার ৪৪ দিন পর অনশন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তার কারণ হিসেবে মঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে, সরকারি কর্মচারীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। সেই কারণেই ৪৪ দিন পর লাগাতার অনশন কর্মসূচি তুলে নিতে হলো।
কিন্তু তবুও যে তারা ডিএ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন, সেটাও জানিয়ে দিয়েছেন। এর মধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি বিভিন্ন পদ্ধতিতে মাঝে মাঝেই তারা ঘোষণা করে রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। যদিও সেই সমস্ত পদক্ষেপে সেরকম এটা কাজ হচ্ছে না দেখে যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের একাংশ আবার বলতে শুরু করেছে, টানা ১৪ দিনের ধর্মঘট ডেকে যাতে রাজ্য সরকারকে চাপে ফেলা যায়। আর যখন এরকম একটা পরিস্থিতি চলছে, তখন জানা গেল, রাজ্য সরকারি আধিকারিকদের ১০ জনকে বদলি (Govt Employee Transfer Order) করে দেওয়া হয়েছে।
নবান্নের পক্ষ থেকে সেই বদলির নির্দেশ ইতিমধ্যেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকার যে ১০ জন রাজ্য সরকারি আধিকারিকের বদলির নির্দেশ দিয়েছে, তাদের মধ্যে কাউকে অর্থ দপ্তর থেকে বিডিও অফিসে বদলি করা হয়েছে, আবার কাউকে বিডিও অফিস থেকে বন দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবার কেন্দ্রীয় হারে ডিএ মেটানোর দাবিতে যে সমস্ত সরকারি কর্মচারীদের একাংশ ডিএ আন্দোলন করছেন, তারা জানাচ্ছেন, যে ১০ জন সরকারি আধিকারিক্যের নাম বদলির তালিকায় রয়েছে, তারা প্রত্যেকেই কোনো না কোনো সময় DA আন্দোলনের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
আর সেখান থেকেই তাদের প্রশ্ন, তবে কি DA আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্যই এবার বদলি শুরু হয়ে গেল? অভিযোগ তুলতে শুরু করেছেন ডিএ আন্দোলনকারীরা। বকেয়া ডিএ মেটানোর দাবিতে ১০ মার্চ একদিনের ধর্মঘট করেছিলেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। সেই ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে নবান্নের তরফে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আর সেই পদক্ষেপ অনুযায়ী সেদিন যে সমস্ত কর্মচারীরা অনুপস্থিত ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। আন্দোলনকারীদের যারা অনুপস্থিত ছিলেন, তাদের কাছে একের পর এক শোকজের চিঠি এসেছে।
আর তারপরেই একদিনের বেতন কাটাসহ চাকরি জীবন থেকে একদিন বাদসহ বিভিন্ন ধরনের কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে নবান্নর তরফে। বকেয়া ডিএ কেন্দ্রীয় হারে মেটাতে হবে, এই দাবীতে যেভাবে আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াচ্ছিলেন তারা, এবার আবার অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, আন্দোলন কি একইভাবে চলতে থাকবে? কারণ এই ১০ জন সরকারি আধিকারিকের বদলির পরে সমস্ত সরকারী আধিকারিক, কর্মচারী যারা এই DA বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন, তারা কি একইভাবে উপস্থিত থাকবেন? ডিএ আন্দোলনকারীরা জানাচ্ছেন, যাদের বদলি করে দেওয়া হয়েছে, তারা ধর্না মঞ্চে আগামী দিনেও নাকি থাকবেন। যতদূরেই বদলি করে দেওয়া হোক, আন্দোলনে তারা যোগ দেবেন বলেই যৌথ মঞ্চের সদস্যরা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন, LIC গ্রাহকদের জন্য দুঃসংবাদ, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে জনপ্রিয় LIC Policy, পলিসি থাকলে এক্ষুনি দেখুন।
এদিকে মধ্য শিক্ষা পর্ষদের তথ্য অনুযায়ী একসঙ্গে ২৩০০০ শিক্ষকদের শোকজ করা হয়েছে। যেখানে শুধুমাত্র হাইস্কুলের শিক্ষকেরা রয়েছেন। তাদের সরাসরি DI অফিসে উত্তর দিতে হবে। সেই সাথে একদিনের বেতন কাটা যাবে। এদিকে প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সরকারি কর্মীদের সংখ্যাটা তার দ্বিগুন। কমবেশি দেড় লাখ অনুপস্থিত ছিলেন ঐদিন। যদিও একাংশ জানাচ্ছেন ধর্মঘট সফল নয়। কিন্তু শোকজের এই সংখ্যাটা সেই কথাকে মান্যতা দেয় না। যদিও শোকজের চিঠি পেয়ে আতঙ্কিত হওয়ার বদলে উৎসবে মেতেছেন কর্মীদের একাংশ। স্যোশাল মিডিয়াতে তাদের বিবৃতি দেখলে তা স্পষ্ট। তাদের মতে এটা নাকি তাদের মেরুদন্ডের সনদপত্র!
আপনার মন্তব্য নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
প্রতিবেদক বকলম.
নগদ কত টাকা ঘরে রাখলে হতে পারে পুলিশ রেট, না জানলে এক্ষুনি জানুন।