Advertisement
রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ (Arrear DA West Benga)
Advertisement

বকেয়া ডিএ বিষয়ক মামলায় হাতে আর বেশি সময় নেই রাজ্যের কাছে। রাজ্য সরকারি কর্মীরা ইতিমধেই সুপ্রিম কোর্টে ক্যাভিয়েট দাখিল করেও রেখেছে। এবারে শোনা যাচ্ছে যে, আগামীকালই হয়তো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর সরকার আধিকারিক যাচ্ছেন সুপ্রিম কোর্টে। এর আগেই রাজ্য সরকারি কর্মীদের প্রশংসায় পঞ্ছমুখ হলেন শাসক দলের এক নেতৃত্ব যার নাম রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।

Advertisement

ইনি হলেন কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান। তিনি পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রক এর মন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন। তার বক্তব্য, রাজ্য সরকারি কর্মীরা কেন্দ্রীয় সরকারকে বিভিন্ন রকমের কর আদায় করে দেয় কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের মতোই। তাই, রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ সহ সকল প্রকার ডিএ বিষয়ক দায়িত্ব নিতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকেই।

Advertisement

কিন্তু রাজ্য সরকারি কর্মীদের একটি সংগঠন এর অন্যতম নেতা মলয়বাবু জানান, এই সকল উল্লেখযোগ্য বক্তব্য তিনি কেন আদালতে বলেন নি? তার এই সকল বক্তব্যকে সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং আবোল তাবোল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। মলয়বাবু আরও জানান, ডিএ বিরোধী দলের দাবি নয়, বরং রাজ্য সরকারি কর্মীদের হাইকোর্ট স্বীকৃত সাংবিধানিক তথা আইনি অধিকার। তারা ডিএ আদায় করেই ছাড়বেন।

Advertisement

বকেয়া মহার্ঘ্য ভাতা সংক্রান্ত বিষয়ে কোলকাতা হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে রাজ্য সরকারি কর্মীরা সন্তুষ্ট হয়েছিলেন। তবে রাজ্য সরকার এই বিষয়ে যেতে পারেন সুপ্রিম কোর্টে – কোলকাতা হাইকোর্টে এমনটাই জানিয়েছিলেন রাজ্যের অর্থ দপ্তরের এজি। তবে কবে যাবেন সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছুই জানান নি। তবে আগামী সোমবার বকেয়া ডিএ বিষয়ে বেশ তোড়জোড় শোনা যাচ্ছে।

কোলকাতা তথা গোটা রাজ্যবাসী পুজো পরবর্তী কার্নিভাল উদযাপনের মধ্য দিয়ে শেষ করল দুর্গাপুজো। এবারের পুজোতে ২০১৯ সালের তুলনায় আর্থিক লেনদেন বেড়েছে ৫৪% এর বেশি। রাজ্যের মন্ত্রী ববি হাকিম রাজ্যবাসীর প্রশংসা করে বলেন, আগামী বছর গুলিতে এই পুজোতে আয় দাঁড়াবে ১ লক্ষ কোটি টাকায়। তার কথায় রাজ্য আর্থিক দিক থেকে বেশ স্বচ্ছল হচ্ছে ধীরে ধীরে। এছাড়াও রাজ্যের অর্থমন্ত্রীও এমনই মত পোষণ করেন।

EK24 News

পুজোর ছুটি বাড়ছে, বিতর্কের পর কি সিদ্ধান্ত হলো

ক্যাভিয়েট কথাটা হয়তো অনেকের কাছেই নতুন। এটি একটি ল্যাটিন দেশের শব্দ যার অর্থ হল- যে বিষয়ে মামলা করা হবে, তার সম্পর্কে মামলাকারী সংগঠনকে অবগত করাতে হবে। অর্থাৎ, রাজ্য যদি বকেয়া ডিএ মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায়, তাহলে ওই দুটি সরকারি সংগঠনের কাছেও মামলার কপি যাবে। ফলে একতরফা কোন সিদ্ধান্ত বা স্টে অর্ডারের সম্ভাবনা থাকছে না।

Advertisement

এক ঝলকে বকেয়া ডিএ মামলা – 2016 – স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনালে মামলা দায়ের করেছিল রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভ: এমপ্লয়িজ। আইনি অধিকারের মান্যতা পায় ডিএ। এর আগে দয়ার দান নামে আখ্যায়িত করা হতো ডিএ কে।

2018 – পূর্বের 2016 সালের স্যাট এর রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কোলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে রাজ্য সরকার। সেই রিভিউ মামলা খারিজ করেছিল কোলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত এবং বিচারপতি শেখর ববি শরাফের ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় দিয়েছিলেন। ডিএ সরকারি কর্মচারীদের আইনি অধিকার – পুন: প্রতিষ্ঠা হল।

ফিরে দেখা – বকেয়া ডিএ মামলা

2019 – রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের পক্ষে রায় দিয়েছিল স্যাট। সেইসময় রাজ্য সরকারকে ছ’মাসের মধ্যে সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মিটিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া তৈরী করে বকেয়া মিটিয়ে দেবার নির্দেশ দিয়েছিল স্যাট।

Advertisement

2022 – রাজ্য সরকার স্যাট এর রায়ের বিরুদ্ধে আবার মামলা করে হাইকোর্টে। চলতি বছরের ২৯ শে এপ্রিল হাইকোর্টে মামলার শুনানি হয়েছিল। তারপর ২০ শে মে হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল, তিন মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ পুরোপুরি মিটিয়ে দিতে হবে রাজ্য সরকারকে।

যদিও সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার দিনকয়েক আগে হাইকোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করে রাজ্য সরকার। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে সেই মামলার শুনানি শুরু হয়। ৯ সেপ্টেম্বর শেষ হয় সেই রিভিউ পিটিশনের সওয়াল-জবাব। এরপর মামলার রায়দান সাময়িক স্থগিত রাখা হয়েছিল।

দীপাবলিতেও বোনাস! সরকারি কর্মীদের লক্ষ্মীবারে সুখবর। পেনশন কবে? পড়ে দেখুন।

তারপর ২২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে খারিজ হয়ে যায় রাজ্য সরকারের রিভিউ পিটিশন। কোলকাতা হাইকোর্ট আগের রায়কেই বহাল রাখে। অর্থাৎ তিন মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে। কিন্তু তা মানে নি রাজ্য সরকার।

Advertisement

বকেয়া কবে সময়মতো না মিটিয়ে রাজ্য সরকার মহামান্য কোর্টের রায় অবমাননা করে ফেলে। আর সেই কারণে রাজ্য সরকারি কর্মী সংগঠন থেকে করা হয় কনটেম্পট মামলা। মামলায় হলফনামা দিতে বলা হয়েছে রাজ্য সরকারকে।

অন্যদিকে ডিএ নিয়ে কি ভাবছে রাজ্য সরকার। আইন অনুসারে রাজ্যের হাতে এখন দুটি পথই খোলা আছে।
১) হাইকোর্টের রায় মেনে নেওয়া, এবং ডিএ প্রদান করা।
২) সুপ্রীম কোর্টে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপিল করা।
এদিকে আইন অনুসারে এবং অতীতের অন্যন্য রাজ্যের মামলার রায় ঘাটলে দেখা যায়, এই মামলায় এর আগে একাধিক বার রায় গেছে সরকারি কর্মীদের পক্ষে। সুতরাং সুপ্রীম কোর্টে রাজ্য আবার হারবে, সেকথা জেনেই রাজ্য আপিল করবে। কিন্তু আগামীকাল একটি বিশেষ মিটিং রাখা হয়েছে। শেষ মুহুর্তে এই ব্যাবাপ্রে সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত হবে। এবং এরপর জানা যাবে। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রাজ্য সুপ্রীম কোর্টেই যাচ্ছে।

এদিকে আগামী ৯ নভেম্বর কোলকাতা হাইকোর্টে বকেয়া ডিএ মামলার শুনানি হবে বলে জানানো হয়েছে। এবারে কনটেম্পট মামলা চলছে কোলকাতা হাইকোর্টে আর ওদিকে কিভিয়েট দাখিল হল সুপ্রিম কোর্টে। দুই দিক থেকেই বকেয়া ডিএ নিয়ে আক্রমণ রাজ্য সরকারকে। আরো আপডেট পেতে সঙ্গে থাকুন। ধন্যবাদ।
Written by Mukta Barai.

Advertisement
Advertisement
Advertisement

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Advertisement