অতিমারীর ভয় কাটলেও নতুন আতংক Adenovirus, সেই সময়কার ছবি মনে পড়িয়ে দিচ্ছে। আর এতেই স্কুলে শিশুদের জন্য জরুরি নির্দেশিকা জারি।
সকাল হলেই কচিকাঁচাদের কলরবে মুখরিত হয়ে উঠতো স্কুল সংলগ্ন এলাকা। সেই দৃশ্য কার্যত ধীরে ধীরে উধাও হতে শুরু করেছে। মনে পড়ে যাচ্ছে, সংক্রমনের সময়কার স্কুলের সেই ছবি। প্রি প্রাইমারি স্কুলগুলোর (Pre primary School) ছবি ধীরে ধীরে বদলাচ্ছে। শিশুদের হাজিরার সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। তার ফলে আর শিশুদের গলার আওয়াজ স্কুল সংলগ্ন এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে না। আর এর পিছনে মূল যে কারণ রয়েছে তা হল, অ্যাডিনোভাইরাস (Adenovirus).
Adenovirus in West Bengal:
সম্প্রতি প্রি স্কুলের শিশুদের মধ্যে অ্যাডিনোভাইরাস সংক্রমণ বেশি পরিমাণে ছড়াতে শুরু করেছে। মূলত ৫ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুরাই অ্যাডিনোভাইরাসের (Adenovirus) দ্বারা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, গত দুই মাসে রাজ্যে অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৫ টি শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটেছে (বেসরকারী মতে আরও বেশি বলে দাবি). আর এর ফলে শিশুদের প্রি প্রাইমারি স্কুলে পাঠাতেও রীতিমত আশঙ্কিত অভিভাবকরা।
এর মধ্যেই বহু স্কুল কর্তৃপক্ষ সংক্রমণের সময়ে যেভাবে অনলাইনে ক্লাস (Online Class) নেওয়া শুরু হয়েছিল, সেই পদ্ধতি চালু করা যায় কিনা সেই বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছে।
এই মুহূর্তে যে সমস্ত প্রি প্রাইমারি স্কুলের ক্লাস চলছে, সেখানে শিশুদের সংখ্যা এতটাই কম যে প্রি স্কুলের ছুটি কখন হয়ে যাচ্ছে বোঝা যাচ্ছে না। এবার সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, যে সমস্ত প্রি স্কুল এখনো খোলা রয়েছে, সেখানে অ্যাডিনোভাইরাস সংক্রমণ রুখতে (Avoid the Spread of Adenovirus) কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? শিক্ষক শিক্ষিকারা স্বীকার করে নিচ্ছেন, এত ছোট বাচ্চাদের মাস্ক পরিয়ে রাখা অসম্ভব। নিউ টাউন এবং সল্টলেক এর একাধিক প্রি স্কুলের অধ্যক্ষা নবনীতা বসু জানিয়েছেন, শিশুদের উপস্থিতির সংখ্যা গত কয়েক দিন ধরে অনেকটাই কম। আমরা বলেছি শিশুর কোনোরকম শারীরিক অসুবিধা থাকলে সে যেন স্কুলে না আসে। আবহাওয়ার পরিবর্তনের সময় এমনিতেই শরীর খারাপ হচ্ছে। সেই পড়ুয়া যখন স্কুলে আসবে তখন তাকে ফিট সার্টিফিকেট নিয়ে আসতে হবে।
রাজ্যের যে সমস্ত মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুলে প্রি প্রাইমারি রয়েছে, সেখানেও স্কুল কর্তৃপক্ষ শিশু পড়ুয়াদের মাস্ক পরিয়ে স্কুলে পাঠানোর কথা বলছেন। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল বলেন, প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের বলেছি, তারা যেন স্কুল চলাকালীন যথেষ্ট সতর্কতা গ্রহণ করেন।
সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য বলেন, মাস্ক পরে খুদেদের আসতে বলেছি। তবে এত ছোট পড়ুয়াদের পক্ষে মাস্ক পরে থাকাটা যথেষ্ট সমস্যার। ক্লাসে এখন পড়ুয়া অনেক কম আসছে।
কসবার একটি প্রি স্কুলের অধ্যক্ষা তনুশ্রী দাস জানান, স্কুলে দেড় বছর থেকে ৫ বছর বয়সী পড়ুয়ারা আসে। তাদের সব সময় মাস্ক পরিয়ে রাখা সম্ভব নয়। আবার তারা নিয়ম মেনে শারীরিক দূরত্ব মেনেও কি বসতে পারে? অভিভাবকদের বলেছি, সন্তানদের স্কুলে পাঠাবেন কিনা তাদের উপরেই নির্ভর করছে। শিশুর শারীরিক অসুবিধা অসুস্থতা থাকলে স্কুলে পাঠানোর দরকার নেই। করোনার সময় স্কুলে শিশুরা মা-বাবার সঙ্গে বসে অনলাইনে ক্লাস করেছিল, প্রয়োজনে সেভাবেই অনলাইন ক্লাস করানো হতে পারে।
এই নতুন স্কলারশিপে আবেদন করলেই পাবেন বছরে সর্বোচ্চ 1 লাখ টাকা।
প্রি স্কুলের অধ্যক্ষরা জানাচ্ছেন, জ্বর, কাশি, সর্দি বা শ্বাসকষ্টজনিত কোনো শারীরিক অসুস্থতা থাকলে শিশুদের বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্স ফর প্রি স্কুল এডুকেশন এর চেয়ারম্যান তমাল মুখোপাধ্যায় বলেন, এখন প্রি স্কুলের শিক্ষাবর্ষ শেষের সময়। সেভাবে স্কুলগুলিতে কোনো চাপ নেই। শিশুদের স্বাস্থ্যকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্রয়োজনে শিশুরা বাড়িতেই থাকুক। শিশুদের স্বাস্থ্য নিয়ে কোনো রকম আপোষ করা ঠিক নয়।
রাস্তায় দুর্ঘটনা ও বিপদগ্রস্ত ব্যাক্তিকে সাহায্য করলেই পাবেন 5000 টাকা.
Adenovirus নিয়ে নবান্নে বৈঠকঃ
এই মুহূর্তে রাজ্যে শিশুদের মধ্যে Adenovirus আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। পেডিয়াট্রিক আই সি ইউতেও জায়গা কমছে। করোনার মতো ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। আর এই সমস্যা নিয়েই নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠক করেছেন। প্রি প্রাইমারি স্কুলগুলিতে ফের অনলাইনে ক্লাস করানো যায় কিনা সেই বিষয়েও ভাবনা চিন্তা চলছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও এখনও স্কুল বন্ধের কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে আগামী সপ্তাহ পর্যবেক্ষণে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবং সমস্ত প্রাথমিক স্কুলে গাউডলাইন পাঠানোর কথা বলা হয়েছে।
Written by Rajib Ghosh.